Type Here to Get Search Results !

Ex যখন বউ part-13

লিখেছেনঃ Writer Srabon Ahamed Sayed



আমিঃ দেখ,, যা হবার তা হয়ে গিয়েছে,,, এখন আর আমার কিছু করার নেই,,, ডিভোর্স পেপার টা হাতে আসলেই আমি সাইন করে তোমাকে মুক্তি দিয়ে দেবো।
রিয়াঃ সাদ! আমিতো ইচ্ছে করে কিছু করিনি,,, আর আমিতো তোমায় ভালোবাসি।
আমিঃ দেখ,,আমি তোমার কোনো কথা শুনতে চাই না। প্লিজ আমাকে আমার মতো থাকতে দাও।
রিয়াঃ (চুপ)
আমিঃ (কিছুক্ষণ পর) আচ্ছা তুমি খাটে ঘুমিয়ে যাও। আমি নিচে ঘুমাবো।
তারপর রিয়ার কথার কোনো উপেক্ষা না করেই আমি নিচে বিছানা করে শুয়ে পড়লাম।
পরের দিন সকালে নাস্তা করে বাইরে বেরুতে যাবো,, ঠিক তখনই রিয়া আমার সামনে এসে আমাকে হঠাৎ করেই জরিয়ে ধরে হু হু করে কান্না করে দিলো।
আমিঃ এইই কি হইছে,,, এমন বোকার মতো কান্না করতেছো কেন!
রিয়াঃ প্লিজ আমায় ছেরে দিও না,, আমি তোমায় অনেক ভালবাসি।
আমিঃ শুনো,, একটা মানুষ কে শুধু মাত্র ভালোবাসলেই হয়না,,, তার প্রতি বিশ্বাস আর ভরসাটাও রাখতে হয়। যেটা তোমার মধ্যে নেই।
রিয়াঃ (কান্নাজরিত কন্ঠে) সাদ আমি তোমায় অনেক বিশ্বাস করি।
আমিঃ ( একটা মুচকি হাসি দিয়ে) বিশ্বাস! তাও তুমি!এই আমাকে? হাউ ফানি🤣। শুনো ভালোবাসার মানুষটা ভুল করলেও তাকে শুধরানোর একটা সুযোগ দিতে হয়। তার পাশে থেকে ওই ভুল পথ থেকে তাকে ফিরিয়ে আনতে হয়। আর তাতেও যদি সেই মানুষটার মধ্যে কোনো পরিবর্তন না ঘটে,, তাহলে তাকে ছেড়ে দেওয়াটাই শ্রেয়।
কিন্তু তুমি! তুমি কি করছ?
রিয়াঃ দেখ,, আমাকে এই বারের মত মাফ করে দাও। আমি আর কখনও এমন ভুল করবো না।
আমিঃ মাফ! তাও তোমায়। কই আমাকে তো তুমি মাফ করো নি। আমি যে তোমায় বলেছিলাম,,, আমার আম্মু হার্টের রুগি,, আমার আম্মু এটা সইতে পারবে না,,, তুমি আমাকে ডিভোর্স দিও না,,,আমি তোমার সব কথাই শোনব,,, তোমার কোনো প্রকার কষ্টের কারণ হবো না। আমাকেতো তুমি একটা সুযোগ ও দাও নি। আচ্ছা আমিতো কোনো ভুল করিনি,, তাও তুমি আমায় শাস্তি দিয়েছো। আচ্ছা তুমি ফিরিয়ে দিতে পারবে আমার কষ্টের সেই রাত গুলো? ফিরিয়ে আনতে পারবে আমার আর আম্মুর সেই বন্ধু মোহন সম্পর্ক টাকে। আমার আম্মুর চোখের জলের মূল্য তুমি রিয়া দিতে পারবে? আমার আম্মুতো কোনো ভুল করেনি। তোমাকে সে নিজের মেয়ের থেকেও বেশী ভালো আর ভরশা করতো,, আর সেই মানুষটার চোখের পানিও তোমার রিদয় টাকে নরম করতে পারে নি।
রিয়াঃ (কান্না করে দিয়ে) আমাকে তুমি যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নেব,,তবুও আমাকে ছেড়ে দিও না। প্লিজ 😭
আমিঃ আই এম সরি,,, তোমার শাস্তি একটাই,, তুমি আমার জীবন থেকে চলে যাও। (কথাটা বলেই আমি আমার বাইরে চলে আসলাম)
রুবেল কে আর হাবিব কে কল দিয়ে আড্ডাখানায় আসতে বলে,, আমিও আড্ডা খানায় চলে গেলাম। তারপর ওদের সাথে আড্ডা দিয়ে দুপুরের দিকে বাসায় ফিরে গোসল করে দুপুরের খাবার খেয়ে,, একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। তখনই খেয়াল করলাম রিয়া রুমে বসে নিরবে চোখের জল ফেলতেছে। হঠাৎ করেই কেমন যেনো একটু মায়া হলো। আমি উঠে তার কাছে গিয়ে বসলাম। তারপর ওকে বললামঃ দেখো রিয়া। কান্না করলে আর এখন কোনো লাভ হবে না। এত সুন্দর চেহারাটা শুধু শুধু খারাপ করো না।
রিয়াঃ ( এক গাট্টি রাগ মাথায় লইয়া) আমি এক দিকে কান্না করতেছি আর তুই মজা লস!
আমিঃ লে খোকা! আমি মজা লইলাম কই? আমিতো তুমাকে ভালো উপদেশ দিচ্ছি। দেখ তোমার এই সুন্দর চেহারাটা নষ্ট হয়ে গেলে আর কেউ ই তোমার দিকে ফিরেও তাকাবে না। আর রোহানের মত ছেলেরা তোমাকে পাওয়ার আখাংকাও করবে না। তখন তোমার কি হবে? প্লিজ কান্না করো না🤢
আমিঃ( রক বালতী রাগ মাথায় লইয়া) তুমি থাকো তোমার উপদেশ নিয়ে।( কথাড়া কইয়াই এক বদনা রাগ আমার দিকে ছুড়ে মাইরা,, আর এক বস্তা রাগ তাহার সাথে লইয়া ছাদের উদ্দেশ্যে ভাগা দিলো)
যা বাবা 😒 বেশি কষ্ট দিয়ে ফেললাম নাতো। নিশ্চয় এখন ছাদে গিয়ে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কান্না করবে। থাক কষ্ট পাক গিয়ে,, সে কষ্ট পাইলে আমার কি! একটু কষ্ট করে বোঝুক অন্য কাউকে কষ্ট দিলে তা সহ্য করতে তার কতটা কষ্ট হয়। তারপর আমিও হাত পা ছাইরা দিয়া সেইইই লেবেলের একটা ঘুম দিলাম। বিকেলের দিকে ঘুম ভাংলো রুবেলের কলের রিংটোন এর আওয়াজে।
আমিঃ (রিসিভ করে) কিরে?
রুবেলঃ কিরে ব্যাটা কৈ তুই?
আমিঃ বাসায় ঘুমাইতেছি।
রুবেলঃ তারাতারি ঘুমটা পকেটে লইয়া,, আড্ডা খানায় আয়।
আমিঃ আইচ্ছা ভাউ,,, মুই আইতেয়াছি।
তারপর বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়েই আড্ডা খানার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম।
তারপর হারামি গুলার সাথে আড্ডা শেষ করে রাতে বাসায় ফিরলাম,,, রাতের খাবার শেষ করে,, যেই খাবার টেবিল থেকে উঠতে যাবো,, ঠিক তখনই লক্ষ্য করলাম রিয়া খাবার শুধু নাড়াচাড়া করছে,,, কিন্তু খাচ্ছে না।
আমিঃ রিয়া খাচ্ছো না কেন?
রিয়াঃ (আমার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে) আমার খেতে ইচ্ছে করে না।
আব্বুঃ মা আমার,, তোমার কি কিছু হয়েছে? শরীর খারাপ!
রিয়াঃ না বাবা আমি ঠিক আছি। বিকেলে হালকা কিছু খেয়েছি তো,, তাই খোদা মরে গিয়েছে।
আম্মুঃ ( চুপ)
আমিঃ আচ্ছা জুর করে খেয়ে নাও,, (কথাটা বলেই আমি আমার রুমে এসে কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে গুনতে ঘুমিয়ে পড়লাম)
৩ দিন পর.....
রাতে বিছানায় শুয়ে আছি,, এমন সময় রিয়া আমার কাছে এসে বললঃ আমার কিছু বলার ছিলো।
আমিঃ হুম বলো।
রিয়াঃ তুমিই তো বলো,, ছেড়ে যাওয়া না,মানিয়ে নেওয়াটাই ভালোবাসা। তাহলে তুমি আমাকে এখন ছেড়ে দিচ্ছো কেনো?
আমিঃ দেখ,, তুমি যদি ভুল করতে,, বা আমায় শুধু মাত্র ছেড়ে যেতে,, তাহলে আমি তোমায় মানিয়ে নিতাম। কিন্তু তুমিতো আমাকে শুধু ছেড়ে যাওনি,, আমাকে দিনের পর দিন ঠকিয়েছো। বিয়ের আগে না হয় আমাকে কিছু না বলেই তুমি ছেড়ে গিয়েছিলে,, কারণ আমি শুধু মাত্র একাই কষ্ট পেতাম,,, কিন্তু বিয়ের পর,,,তুমি শুধু আমাকে ছেড়ে যাচ্ছিলে না,, ছেড়ে যাচ্ছিলে আমার মা বাবা সবাই কে। তাদের বিশ্বাসের বুকে তুমি নিজ হাতে ছুরি চালিয়েছো। তারপরও আমি সব কিছুই মেনে নিতাম কিন্তু তুমি আমাকে ছেড়ে গিয়ে অন্য কারও সাথে সম্পর্কে জরিয়ে গিয়েছো,, আচ্ছা কখনো যদি আমার ফেমিলির কেউ জানতে পাড়ে তুমি আমাকে রেখে অন্য একটা ছেলের সাথে। ছিহ,,, তোমার এই সুন্দর চেহারাটা দেখলেও এখন আমার অসম্ভব ঘৃণা হয়।
আর তুমি কথায় কথায় বলো তুমি আমায় ভালোবাস। আচ্ছা এটা কি সত্যিই ভালোবাসা,,, তুমি কোথাকার কোন ছেলের কথায় আমাকে অবিশ্বাস করে ফেললে। আমাকে একটাবার অন্তত জিজ্ঞেস তো করতে পারতে। আর আমাকে জিজ্ঞেস না করলেও তো,, তুমি অন্তত একটু খোঁজ নিয়ে তো দেখতে পারতে। তুমি আমায় অন্য একটা মানুষের কথায় হুট করেই ছেড়ে দিলে,, তা কাল যে অন্য কেউ এসে তোমাকে একটা বানিয়ে মিথ্যা প্রোভ দেখাইলে আবার আমাকে ছেড়ে যাবানা তার কোনো ভরষা তো নেই। আগে ভালোবাসার মানুষটাকে বিশ্বাস করতে শেখো,,, নয়তো জীবনের সব টুকু ভালোবাসা উজার করে দিলেও তুমি তার সাথে কখনই সুখী হবা না। সুখটা হচ্ছে আমাদের নিজের রুচির আর বিলাশিতার উপর নির্ভর করে। যার রুচি আর বিলাসিতা যত কম,, তার সুখ ততই বেশি।
যাও অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো।
রিয়াঃ আচ্ছা আমাকে কি কখনোই তুমি ক্ষমা করবে না.?
আমিঃ রিয়া ঘুমাও গিয়ে,, অনেক রাত হয়েছে।
রিয়াঃ তারমানে আমাকে তুমি ক্ষমা করবেই না।
আমিঃ রিয়া প্লিজ ডিস্টার্ব করো নাতো,, ঘুমাও প্লিজ।
পরের দিন বিকেলের দিকে হারামিগুলার সাথে আড্ডা দিতেছি। এমন সময় আম্মুর কল পেয়ে অনেকটাই চমকে উঠলাম। আম্মু আমার সাথে রিয়া আর আমার ডিভোর্সের কথাটা জানার পর আর আমার সাথে কথা বলেনি। আর আজ কল দিয়ে দিলো,, আমি তারাহুরো করে কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আম্মু ভয়ার্ত কন্ঠে বলে উঠলোঃ সাদ বাসায় আয় এক্ষুনি,,, রিয়া কেমন যেনো করছে! মনে হয় উল্টো পাল্টা কিছু খেয়েছে। ওর অবস্থা খুবই খারাপ,, তুই তারাতাড়ি আয়। (আমি আর এক মুহুর্তের জন্যও দেরি না করেই বাসার উদ্দেশ্যে দৌড় দিলাম,, আমার এমন পাগলামো দেখে রুবেল আর হাবিব ও আমার সাথে সাথে দৌড় দিলো।)
রুবেলঃ সাদ,, কি হইছে?
আমিঃ( কিছু বলতে পারছি না,, শুধু দৌড়াচ্ছি)
হাবিবঃ সাদ প্লিজ কি হইছে বল?
আমিঃ প্লিজ তোরা আমার সাথে আয়,,, রিয়ার কি যেনো হয়েছে।
তারপর বাসায় পৌছে যেই রিয়ার কাছে গেলাম,, দেখি ওর মুখ দিয়ে লাল বেড় হচ্ছে,,, আর অনেক বমি করতেছে। ওকে আমি কুলে নিতেই ওর হাত থেকে বিষের একটা ছোট ফ্লোরে পড়লো।
রুবেলঃ সর্বনাস হয়ে গেছে। রিয়াতো বিষ খাইছে।
*পরবর্তী পর্ব আগামীকাল দুপুর ২ টায় প্রকাশ করা হবে। by the grace of Allah 😍
Waiting for next part....
পূর্ববর্তী পর্ব                                                                                            পরবর্তী পর্ব

Post a Comment

1 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.