Type Here to Get Search Results !

লাল চুড়ি

লিখেছেন: রাকিব হাসান 



প্রতিদিনের মতোই নেহা আজও টিফিন বক্সে তুষারের জন্য কিছু একটা বানিয়ে রাখতো । আজও তার ব্যাতিক্রম নয়। কলেজ যাওয়ার সময় নেহা ভালোভাবে টিফিনটা দেখে নেয়, নিয়েছে কিনা?

নাহ! সব ঠিকঠাক । কলেজে রওনা হয় নেহা। তুষারও অনেক সকাল বেলা কলেজ এর জন্য বের হয়ে পড়ে। বাসা মোহাম্মদপুর, তাই আসতে মাঝে মাঝেই জ্যামে পড়তে হয় তুষারকে। তাই আজ সে ঠিক করল ফজরের নামাজ পড়েই যাবে কলেজ। তো সেদিন খুব ভোরেই কলেজ বাস ধরে চলে আসে কলেজে। এদিকে নেহাও তুষারের জন্য কলেজে অপেক্ষা করতে থাকে। তুষারকে দেখেই নেহা দূর থেকে এগিয়ে আসতে থাকে। শুরু হয় কথপোকথনঃ আজকে এত তাড়াতাড়ি এলে যে? না, প্রচুর জ্যাম পড়ে ভাবলাম আজ তাড়াতাড়ি বের হব তাই। ওহ! নাস্তা তো করো নি। তাই না? না, সকালে রান্না করার সময় পাই না। নেও এগুলো তোমার জন্য। তুষার নাস্তা সেরে ওর পছন্দের সিট নেহার উলটো পাসটাতে বসে। সারা ক্লাসে কেউ নেই, দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকতো। নেহা মাঝে মাঝে তুষারের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে দেয়। কখনো বা হোমওয়ার্ক কখনো বা ল্যাব অ্যাসাইনমেন্ট গুলো করে দেয়। তুষার টিউশনির টাকা থেকে নেহার জন্য একটা হিজাব কিনেছে। যদিও দেখতে দামি না অতটা মনকারা ডিজাইনের না। তবুও নেহার খুব পছন্দ হলো। তুষার খুব কম কথা বলে। বাকি ১০ টা ছেলের মতো নেহার সৌন্দর্যের প্রশংসা করে না। নেহার রাগ হলেও কিছু বলে না। কারন তুষারের সবসময় সবকিছুতেই উদাসিনতা। একবার, কলেজে সাইন্স ফেস্ট হচ্ছে। সবাই আনন্দ ফূর্তি করছে। তুষার চুপচাপ তার বি এন সি সি ডিউটি করছে। নেহাও এসেছে। তবে আজ শাড়ি পড়েছে। তুষারকে দেখানোর জন্য। কিন্তু তুষার প্রতিবারে মতোই ছোট করে বললো "সুন্দর" । নেহা এবার খুব রেগে গেলো। ইচ্ছে মতো কথা শুনালো তুষারকে। কিন্তু তুষার চুপচাপ সৈনিকের মতো শুনে গেলো ৷ তারপর নেহা অন্যপাশে তার বান্ধবিদের সাথে দেখা করতে চলে গেলো। অন্যান্য কলেজ থেকে কিছু সংখ্যার ছেলে মেয়ে তাদেরকে কলেজে আসলো। ফেস্ট দেখতে। কোনো এক ভাবে সেসকল কলেজ থেকে আগত শাফীন নেহাকে দেখলো। দেখার কিছুক্ষণ এর মাঝেই নেহার সাথে কথপোকথন শুরু করলো। তুষার দুর থেকে ব্যাপার গুলো দেখছিলো। তবুও কিছু বলে নি। কারন তুষার অন্য ১০ টা ছেলের মতো নিজের মানুষকে সন্দেহ করে না। চোখে চোখে রেখে টেনশনে রাখতে চায় না। তাই রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করলো। নেহা তখনও কিছু জানালো না। তুষার ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে নেহাকে অফলাইনে আবিষ্কার করল। তখন নেহার সেলফোনে কল দিলো। কিন্তু অপারেটর জানান দিলো কলটি ওয়েটিং এ রয়েছে।তুষার ভাবলো হয়তো ফ্রেন্ড টেন্ড এর সাথে কথা বলছে। তাই আর ডিস্টার্ব করল না। সকালে কলেজ গিয়ে দেখলো নেহা আসে নি। তুষার কলেজ এর গেটে অনেক্ষন অপেক্ষা করছিলো। নেহা আসে নি। ভাবলো মেয়েটার শরীর খারাপ। এভাবে ৩ দিন হলো নেহা কলেজ আসে না। ফেসবুক এ একটিভ থাকলেও তুষারের টেক্সট সিন করত না কলও ধরত না। একদিন হঠাৎ একটা নেহার নাম্বার থেকে কল আসলো *' হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম তুষার,আমি....... কি ব্যাপার কি হয়েছে তোমার কল ধরছ না কথাও বলছ না। শরীর ঠিকাছে তোমার? তুষার আমি তোমার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না। সো প্লীজ আমাকে আর কোনোভাবে ডিস্টার্ব না করাই ভালো হবে। * তুষার খুব শক্ত মনের মানুষ। ছোটবেলায় যখন মা মারা যায়, তুষার তখনো কাদে নি। নেহাতি ছোট ছিলো। হামাগুড়ি দিয়ে মায়ের কবরের উপর চলে যেত বারবার। চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় বাবার বিয়ে করা নতুন বউ যাতে কোনোভাবে ঝামেলা না করতে পারে সেকারনে তুষারকে আলাদা করে দেয়া হলো। তুষার তখনো কাদে নি। ঈদের সময় যখন তুষারের সব বন্ধু বান্ধব বাবা মা'র দেয়া জামা পড়ে তুষারকে নিয়ে মজা করত। তুষার তখনো কাদে নি। রাতে যখন জর আসতো খুব কষ্ট হতো তুষারের। তুষার কাঁদে নি। মাঝ রাতে বিদ্যুৎ চমকালে ভয় পেয়ে যখন সবাই তাদের মায়ের বুকে চলে যেত ভয় কমানোর জন্য। তখব তুষার সেই দৃশ্য জানলা ধরে তাকিয়ে দেখত। কিন্তু কখনো কাদে নি। তুষার কলটা কেটে পূনরায় নিজের জীবনে ফিরে গেলো। (এক সপ্তাহ পরের কথা) নেহা অনেকদিন পর কলেজে এসেছে। এসে দেখে উপরে ব্যানার টানানো আর তাতে শোক বার্তা লেখা। নেহার ক্লাসের অনেকেই কাদছিলো। নেহা ব্যাপারটা তখন বুঝে ওঠে নি। কেউ একজন জানালো তুষার এক্সিডেন্ট এ স্পট ডেথ। নেহা কোনোকিছু বুঝার আগেই সেন্সলেস হয়ে পড়ে যায়। যখন জ্ঞান ফিরে তখন সিথির হাতে থাকা একটা প্যাকেট সিথি নেহার কাছে তুলে দেয়৷ আর বলে তুষারের হাতে এই প্যাকেটটা ছিলো। প্যাকেটের ভেতর এক জোড়া রঙিন চুড়ি ছিলো। যা নেহার খুব পছন্দ। Think Before dumped somebody, Maybe he/she already dumped by his/her own life. Maybe she/he don't have anything to lose except you! Maybe you are the last hope Maybe you can help him But please don't leave somebody without reason. That's really hurt💔 Stay close 💜 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.