Type Here to Get Search Results !

Ex যখন বউ part-14

লিখেছেনঃ Writer Srabon Ahamed Sayed



রুবেলঃ সর্বনাস হয়ে গেছে। রিয়াতো বিষ খাইছে।
হাবিবঃ সাদ আমি গাড়ি বের করছি,, তুই রিয়াকে বাইরে নিয়ে আয়।
(তারপর রিয়াকে কোলে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়েই মেডিক্যালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম)
মেডিক্যালে পৌছেই তারাহুরা করে রিয়াকে ইমারজেন্সীতে ভর্তি করালাম,,আমি অপারেশন থিয়েটারের বাইরে বসে আছি,,,
এমন সময় আব্বু এসে....
আব্বুঃ (আমার কাছে এসে আমার পিঠে হাত রেখে) চিন্তা করিস না বাবা,,, সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমিঃ (একটা দৃর্ঘশ্বাস ছেরে) ওর কিছু হয়ে গেলে আমি ওর আব্বু আম্মুকে কি জবাব দেবো!
আব্বুঃ এই তুই এমন ভাবে বললছিস কেনো! সব ঠিক হয়ে যাবে তো।
আমিঃ হুম ,, তাই যেনো হয়।
প্রায় ঘন্টা খানেক পরেই অপারেশন থিয়েটার থেকে ডক্টর বেড়িয়ে আসলো। আমি ডক্টরের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলামঃ ডক্টর রুগির কি অবস্থা?
ডক্টরঃ আপনারা সঠিক টাইমে নিয়ে আসতে পেরেছেন , তাই রুগির তেমন কোনো প্রব্লেম হয়নি। রুগি ঠিক আছে,,, আপনি চাইলে একা গিয়ে উনার সাথে দেখা করতে পারেন। তবে লক্ষ্য রাখবেন রুগি যেনো বেশি কথা না বলে।
আমিঃ হুম,, (তারপর আমি রিয়ার কাছে যেতেই দেখি রিয়া নিথর হয়ে বেডে শুয়ে আছে,,,আমি ওর কাছে গিয়ে ওর কাছে বসে ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললামঃ এখন কি কিছুটা ভালো লাগছে?)
রিয়াঃ হুম,,,
আমিঃ তুমি এই বোকামো টা না করলেও পারতে। যদি একটা কিছু হয়ে যেতো।
রিয়াঃ ( একটা মুচকি হাসি দিয়ে) হুম,, তাহলে তো ভালোই হতো। সবাই মুক্তি পেয়ে যেতো। আমার মত মেয়েদের এই পৃথিবীতে না থাকাটাই ভালো। অন্তত আমার জন্য অনেক গুলো মানুষের জীবনের সুখ গুলো হারিয়ে যেতে না।
আমিঃ তোমরা মেয়েরা একটা জিনিস খুব ভালো পাড়ো,,, সেটা কি জানো? অভিমান। এই অভিমান টা কখনও অন্য কারোর উপর দেখিয়ে বেশ কয়েকটা মানুষের জীবন বিপাকে ফেলে দাও,, , আবার কখনো নিজের উপর দেখিয়ে বোকার মতো নিজেকে শেষ করে দাও। আচ্ছা তোমারা কি এটা পারো না! যে,, যেই ভুল গুলোর জন্য আজকে তোমার জীবন টাকে শেষ করে দিতে হচ্ছে,, নিজের অভিমান টাকে কাজে লাগিয়ে সেই ভুল গুলো শুধরে নিতে পারো না? একটা কথা সবসময় মনে রাখবে,,, হেরে যাওয়া না, লড়াই করে বেচে থাকার নামই জীবন।
রিয়াঃ আমি কার জন্য লড়াই করবো? কার জন্য বেচে থাকবো,,, আর সব কিছুই যে আমি শেষ করে দিয়েছি।
আমিঃ দেখ রিয়া,,, জীবনের সব কিছু যেখানে শেষ হয়ে যায়,, সেখান থেকেই আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। তুমি রেস্ট নাও। আমি ডক্টরের সাথে একটু কথা বলে আসতেছি। ( কথাটা বলেই আমি ডক্টরের কাছে যাওয়ার জন্য যেই পা বাড়ালাম,, তখনই রিয়া আমাকে পিছন থেকে ডাক দিলোঃ সাদ,,)
আমিঃ (পিছন ফিরে ওর দিকে তাকিয়ে) হুম বলো।
রিয়াঃ তুমি আমার আব্বু আম্মুকে এই বেপারে কিছু জানিওনা প্লিজ। আমি আর কাউকে কষ্ট দিতে চাইনা।
আমিঃ (কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটা দৃর্ঘশ্বাস ছেড়ে) আচ্ছা তুমি রেস্ট নাও,, তোমার আব্বু আম্মু কিছু জানবে না। (তারপর ডক্টরের সাথে কথাবার্তা বলে যতটুকু বুঝতে পারলাম অন্তত ৩ দিন রিয়ার মেডিক্যালে এডমিট থাকা লাগবে।
রাত প্রায় ২ টা....
আমি রিয়ার পাশে বসেই বেডের উঁচু মাথাটায় হাত দিয়ে তার উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে গিয়েছি। রিয়ার ঝাকুনিতে ঘুম ভাংলো,,, আমি হহন্তদন্ত করে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে বললামঃ তোমার কি খারাপ লাগছে?
রিয়াঃ (আমার দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে বললো) আমারনা খুব খোদা লেগেছে 😣,, আমাকে কিছু খেতে দাওনা।
আমিঃ ( আমার বুকের ভেতর টা অজানা মায়ায় হুট করেই কেপে উঠলো,,, ওর এই খাবার চাওয়ার ভংগিমা টা এতোটাই করুন আর কষ্টের ছাপ বজায় রাখছিলো,, ইচ্ছে হচ্ছিলো নিজের কলিজাটা ওকে দিয়ে দেইই,, কিন্তু ও তো এখন চাইলেই খেতে পারবে না। ডক্টরের পারমিশন ছাড়া খাওয়াতে গেলে অনেক বড় ধরনের কোনো এক্সিডেন্ট ঘটে যেতে পাড়ে,, তাই অকে সান্তনা দিয়ে বললাম) এই তো লক্ষী সকাল হয়ে গিয়েছে,, আর একটু ঘুমাও। সকাল হলেই তোমায় আমার নিজের হাতে খাইয়ে দিবো।
রিয়াঃ (আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকেই চোখটা বুজে ঘুমানোর চেষ্টা করলো,,)
তারপর সকালে ডক্টর আসার পর রিয়াকে চেকআপ করে ডক্টর জানালো যে দুপুরের দিকে তাকে খাওয়ানো যাবে,, তবে খুব অল্প পরিমান খাবার খাওয়াতে হবে।
তারপর আমি রিয়ার কাছে যেতেই রিয়া বললোঃ তুমি টেনসন করো নাতো,, ডক্টর যা বলেছে আমি সব শুনেছি। আমি এখন একটু ঘুমাই,,, আর তুমি খেয়ে নাও। না খেয়ে খেয়ে কতটা শুকিয়ে গিয়েছো।
আমিঃ আচ্ছা তুমি ঘুমাও। আমি খেয়ে নেবো নে।
রিয়াঃ নাহ,, তুমি এক্ষুনি খাবা। যাও খেয়ে নাও,, আমি ঘুমাচ্ছি। কি হলো।
আমিঃ তুমি ঘুমাও,, আমি খেয়ে নেবো,, (কথাটা বলেই আমি রিয়ার কপালে একটা চুমু একে দিয়ে ওর মাথায় হাত বুলাতে লাগলাম,,কিছুক্ষণ পরই খেয়াল করলাম রিয়া ঘুমিয়ে গিয়েছে,, এই পরিটার চেহারাটা এই কয়েক দিনের ব্যাবধানে এক্কেবারে রানু মন্ডলের আকার ধারণ কইরালছে😣 )
পরের দিন রিয়াকে মেডিকেল থেকে বাসায় নিয়ে গেলাম।
রাতে খাবার খেয়ে রুমে এসে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছি,, এমন সময় রিয়া আমার কাছে এসে বললোঃ একি তুমি নিচে বিছানা করেছ কেন!
আমিঃ আমিতো নিচেই ঘুমাব।
রিয়াঃ ( একরাশ হতাশা নিয়ে) তুমি কি আমায় কখনই ক্ষমা করবে না 😭
আমিঃ সেটা সময় হলেই বুঝতে পারবে। এখন ঘুমাও,, আর শুনো,, আশা করি মৃত্যুর সাধটা যে কতটা কঠিন আর ভয়ানক,, সেটা কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছ। আমি জানি এমন বোকামি আর কখনও করবানা। যাও ঘুমিয়ে পড়ো।
লক্ষ্য করালাম রিয়া আর কিছু না বলেই চুপচাপ শুয়ে পড়লো।
তারপর এইভাবেই চলে গেলো বেশ কিছুদিন,,, আমাদের ডিভোর্সের আর মাত্র ৯ দিন বাকি আছে।
বিকেলের দিকে ছাদে বসে প্রকৃতিটাকে উপভোগ করছিলাম,, এমন সময় লক্ষ্য করালাম রিয়া একটা ব্লাক শাড়ী পড়ে ছাদে আসলো। তারপর আমার কাছে গিয়ে বললঃ দেখ তো আমায় কেমন লাগছে?
আমিঃ হুম খুব ভালো। রিয়া শুনো।
রিয়াঃ হুম বলো।
আমিঃ দেখ,, আমি তোমাকে একটা কথা বলবো বলবো করে আর বলা হচ্ছে না। কিন্তু এই কথাটা তোমার জানাটা খুব জরুরি। তুমি কষ্ট পাবে ভেবেই এতোদিন তোমাকে এই কথাটা বলি নাই।
রিয়াঃ ( কিছুটা নার্ভাস হয়ে) কি এমন কথা!
রিয়াঃ আসলে তুমি আর আমাকে পাবে না। কারণ এখন আমি অন্য কারও। তুমি যেদিন রুহানের সাথে মিট করতে গিয়েছিলে,, আমি ওইদিন ই তোমার সব কাহিনী জেনে গিয়েছিলাম,,, আর তারপরই আমার এক কলেজ ফ্রেন্ড রুহি আমার সব কথা কিভাবে যেনো জানতে পাড়ে,,, আর ও আমাকে কলেজের শুরু থেকেই নাকি পছন্দ করত। কিন্তু ভয়ে কখনও বলতে পারে নাই। তারপর আমার এই অহসায়ত্বের কথা জেনে ও আমাকে আমার সারাজীবন পাশে থাকার আশ্বাস দেয়। ভাবলাম তুমি তো আর আমার নেই ই,, লাইফে ভালো থাকার জন্য অন্তত কাউকে তো প্রয়োজন,, আর মেয়েটা অনেক নম্র ভদ্র। এক কথায় যে কারোর মনের মত। তাই আমিও রাজি হয়ে গিয়েছিলাম,,, দেখ রিয়া,, আমার আর কিছু করার ছিলো না,,, আমি নিজেকে সামলে নেওয়ার কোনো মাধ্যম ই খুজে পাচ্ছিলাম না। তাই অনেক ভেবে চিন্তে রুহির প্রপোজালে রাজি হয়ে যাই,, রিয়া প্লিজ তুমি আমাকে ভুলে যাও। আমি রুহিকে ঠকাতে পারবো না।
রিয়াঃ (স্থব্দ হয়ে আমার দিকে তাকিয়েই আছে,, মুখে কোনো আওয়াজ নেই,, আছে শুরু একরাশ হতাশা,, আর চোখের জল।) ওহ,,,
রিয়া আর কিছু না বলেই ছাদ থেকে নিচে চলে যেতে লাগলো।
*পরবর্তী পর্ব আগামীকাল দুপুর ২ টায় প্রকাশ করা হবে। by the grace of Allah 😍
Waiting for next part....
পূর্ববর্তী পর্ব                                                                                                        পরবর্তী পর্ব

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.