Type Here to Get Search Results !

Ex যখন বউ part-9

লিখেছেনঃ Writer Srabon Ahamed Sayed


রিয়াঃ মানে আমি ডিভোর্স চাই। ( রিয়ার মুখে এই কথাটা শোনা মাত্রই আমি বাকরূদ্ধ হয়ে গেলাম,,তারপর নিজেকে কিছুটা সাভাবিক করে নিয়ে বললাম)
আমিঃ তুত তুমি আমার সাথে মজা করছ,, তাই না!
রিয়াঃ না,, আমি তোমার সাথে মোটেও মজা করছি না।
আমিঃ আচ্ছা আমিতো বলেছি,, আমি আর তোমার কষ্টের কারণ হবো না। আর তোমাকে কখনো কোনো ধরনের প্রেশার ক্রিয়েট করবো না। আচ্ছা আমি,, ভুল করে থাকলে প্লিজ মাফ করে দাও।
রিয়াঃ দেখ সাদ,,, এসব বলে আর কোনো লাভ হবে না,,, আমি তোমাকে চাই না,, সেটা একবার বোঝার চেষ্টা করো।
আমিঃ রিয়া আমি নিচে ঘুমাবো। তোমার সাথে কখনও বাজে ব্যাবহার করবো না। প্লিজ রিয়া। দেখ আমার আম্মু তোমায় অনেক ভালোবাসে,,, আমি উনাকে কি জবাব দেবো,,, উনি অনেক কষ্ট পাবে,, প্লিজ রিয়া।
রিয়াঃ উফফ সাদ,, তুমি বুঝতে চাচ্ছ না কেনো,, তোমার সাথে থাকাটা আমার পক্ষে সম্ভব না।
আমিঃ (কিছুক্ষণ চুপ থেকে) আচ্ছা অনেক রাত হয়েছে এখন ঘুমাও। আমরা সকালে কথা বলি।
রিয়াঃ ( কি যেনো ভেবে বলল) আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমাও।
আমিঃ না,, তুমি ঘুমাও,, আমি একটু বাইরে যাবো। (কথাটা বলার সাথে সাথেই রিয়া কিছু না বলেই চুপচাপ শুয়ে পড়লো,,আর আমি বাইরে এসে করিডরে দাড়িয়ে ভাবছি,, আমার ভুল টা কোথায়? আচ্ছা আমিতো ওকে বলেছি,, আমি আর অকে বিরক্ত করবো না,,, তবুও ও বুঝতে চাচ্ছে না কেনো! আমার নিজের জন্য এতটা কষ্ট হচ্ছে না,, তবে আমি আমার ফেমিলিকে কি জবাব দেবো? কি বলবো আম্মুকে। কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই চোখের কোন থেকে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো,,, তারপর রুমে গিয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলাম,,, কিন্তু চোখের পাতাটা কোনো ভাবেই এক করতে পারছি না,, বুকের ভেতরটার ভয়ানক তিব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছি। রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ও নিশ্চন্তে ঘুমাচ্ছে,,, খুব ইচ্ছে করছে ওর মায়া মাখা মোখটায় একটা সুখের পরশ একে দিয়ে,,, খুব করে বলতে,, প্লিজ তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না। আচ্ছা হঠাৎ ওর ছেড়ে যাওয়ার কথায় আমি এতো কষ্ট পাচ্ছি কেনো! আমিকি তাকে সত্যি সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছি? না কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।)
সকালে রিয়া নাস্তা করে রুমে আসতেই বললামঃ রিয়া রেডি হয়ে নাও,, উকিলের কাছে যাবো, তোমার ডিভোর্সের জন্য।(ভেবেছিলাম কথাটা শুনার পর রিয়া কিছুটা শক্ট হবে,,,, কিন্তু তেমন কিছুই ঘোটলো না,, উল্টো ও সাভাবিক স্বরে বললঃ হুম আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি। তুমি নাস্তা করবানা?)
আমিঃ না,,,বাইরে খেয়ে নেবো,, তুমি রেডি হয়ে নাও।
রিয়া রেডি হওয়ার পর ওকে নিয়ে বেরুতে যাবো,, তখনই আম্মু এসে,,
আম্মুঃ কিরে তুই এই সময় বৌমাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস?
আমিঃ একটু ঘুরতে যাবো,,, বাসায় বসে বোরিং লাগছে।
আম্মুঃ তা নাস্তা করবি না! নাস্তা করে যা।
আমিঃ না আম্মু,, এমনিতেই লেট হয়ে গিয়েছে,, আমি বাইরে খেয়ে নেবো। তুমি টেনসন করো না।
আম্মুঃ ( আমার মাথায় হাত দিয়ে) কিরে তোর চেহারাটা এমন শুকনো শুকনো লাগছে কেনো! কিছু হয়েছে?
আমিঃ ( মলিন হাসির আড়ালে চেহারার কষ্টের ছাপটা লোকানোর চেষ্টা করে বললাম) না আম্মু,, আমি ঠিক আছি।
তারপর রিয়াকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম উকিলের অফিসের উদ্দেশ্যে।
গাড়িতে আমি চুপচাপ হয়ে বসে থাকলেও,, লক্ষ্য করালাম রিয়ার মধ্যে তার কোনো প্রতিক্রিয়াই হচ্ছে না। ও সাভাবিক ভাবেই বসে বাইরে প্রকৃতিটাকে উপভোগ করছে।
তারপর যথাসময়ে উকিলের অফিসে পৌঁছে কথাবার্তা বলে জানতে পারলাম, আমাদের ডিভোর্স হবে। কিন্তু শর্ত হচ্ছে আমাদের এখন থেকে 3 মাস অব্দি একই ছাদের নিচে, একসাথে কাটানো লাগবে। তারপর তিন মাস পরেও যদি আমরা এখানে এসে স্বীকার করি, যে আমরা একসাথে থাকতে চাচ্ছি না তাহলেই আমাদের ডিভোর্স হবে। তারপর উকিলের অফিস থেকে বেড়িয়ে রিয়াকে জিজ্ঞেস করলামঃ এখন কি করবো?
রিয়াঃ এখানে তো আর কিছু করার নেই,, আমাদের ৩ অপেক্ষা করা ছাড়া আর তো কোনো উপায় দেখছিনা।
আমিঃ তা তুমি কি আমার বাসায় যাবে? নাকি তোমাদের বাসায় দিয়ে আসবো।
রিয়াঃ দেখ,,, প্লিজ আব্বু আম্মু কে এই কথাটা জানিওনা। ডিভোর্স হওয়ার পর আমি ওনাদের জানাবো। তার আগে উনারা জানতে পাড়লে আমার উপর প্রেসার ক্রিয়েট করবে। আর এই ৩ মাস সাভাবিক হয়েই তোমার সাথে থাকবো।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। তবে এটা খেয়াল রাখবা,, আমার আব্বু আম্মু যেনো এসবের কিছুই জানতে না পাড়ে।
রিয়াঃ হুম জানবে না।
তারপর রিয়াকে নিয়ে বাসায় এসেই,, আমি আড্ডা খানার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। ভেতরের কষ্ট গুলো ভেতরেই থেকে যাচ্ছে,, না কাউকে বলতে পারবো,, না কাউকে বুঝাতে পারবো। হয়তো হারামিগুলার সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিতে পারলে মননের কষ্ট গুলু কিছুটা হালকা হবে।
আনমনে রাস্তায় হাটছি আর এই কথা গুলো ভাবতেছি। যত কিছুই ঘটে যাকনা কেনো,,কাউকে কিচ্ছু বুঝতে দেওয়া যাবে না,, আমাকে শক্ত হতে হবে,, নিজের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে,, কিন্তু আমি যে এখনি ক্লান্ত হয়ে গেছি😭 কষ্ট গুলো আর নিতে পারছি না। শত চেষ্টা করেও নিজেকে সামলে নিতে পারছি না।
তারপর আড্ডাখানায় পৌছাতেই,,
রুবেলঃ কিরে মামা,,, কি অবস্থা?
আমিঃ হুম দুস্ত যব্বর ভালা,,, তোদের কি অবস্থা?
হাবিবঃ কিরে তোর চেহারা এমন লাগছে কেনো? কি হইছে তোর।
আমিঃ কই কিছুনাতো,,,
রুবেলঃ দেখ সাদ,,, আমি তোকে ল্যাংটা কাল থেকে চিনি,,, তুই সবসময় হাসি খুশী থাকিস,, কিন্তু আজ এমন মন মরা হয়ে আছিস কেনো।
আমিঃ আরে ধুর ব্যাটা,, তেমন কিছু হয় নাই। এমিনিতেই একটু মন খারাপ আরকি।
হবিবঃ আচ্ছা তোর যেহেতু মন খারাপ চল আজকে একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি।
আমিঃ নারে,,, আজকে না,,, অন্য একদিন।
তারপর হারামি দুইটা আমাকে এক প্রকার জোর করেই আমাকে নিয়ে ঘুরতে বেড় হলো।
সারাদিন ঘুরাঘুরির পর সন্ধ্যার দিকে যেইইই ফিরলাম,,,ভেতরের কষ্ট গুলো আবারও আমাকে গ্রাস করতে শুরু করলো। কোনো রকম রাতের খাবার টা খেয়েই তারপর বাসায় রাখা ঘুমের ওষুধ এর থেকে বেশ কয়েকটা ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে শুয়ে পড়লাম। অতিরিক্ত ক্লান্তি আর ঘুমের মেডিসিন খাওয়ার কারনে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম ভাংলো,,,
আম্মুঃ কিরে এত বেলা হয়ে গেছে,, তবুও তোর ঘুম শেষ হচ্ছে না?
আমিঃ (মোবাইলের key বাটাম টাতে চাপ দেওয়ার পরই স্ক্রিনের তাকিয়ে দেখি ১০ টা বেজে গিয়েছে) একি আম্মু,, ১০ টা বেজে গেছে! তুমি আমাকে আগে ডাক দিবানা?
আম্মুঃ এর আগেও বেশ কয়েকবার তোকে ডেকে গিয়েছি,, কিন্তু তুই তো উঠছিস ই না।
আমিঃ ( রাতে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ফল) অওঅঅ আসলে কালকে একটু ঘোরাঘুরি করেছি তো,, তাই হয়তো ক্লান্তির কানণে এমনটা হয়েছে। আচ্ছা আম্মু তুমি যাও,, আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি।
আম্মুঃ (আমার কাছে এসে বসে,, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে) কিরে বাবা,,, তোর কি হয়ছে? কালকে সকাল থেকেই লক্ষ্য করছি,, তুই কেমন যেনো হয়ে গেছিস।
আমিঃ ( একটা মুচকি হাসি দিয়ে) আরে আম্মু কিচ্ছু হয়নাই,,,আমি ঠিক আছি।
আম্মুঃ (আমার হাত ধরে) এইই আমিনা তোর মা,, আমাকে বলনা তোর কি হয়েছে?
আমিঃ আম্মুউউ আমি ঠিক আছি। আমার কিচ্ছু হয়নি।( কথাটা বলার সাথে সাথেই আম্মু এক প্রকার রাগ দেখিয়েই আমার রুম থেকে বেরিয়ে গেলো)
এইই আম্মুটানা একদমি আমার কথা বিশ্বাস করছে না,,, এই মা জাতি টানা বড়ই অদ্ভুত! আপনি ভালো থাকার অভিনয় টা সবার সামনে করতে পাড়লেও,,, এই মায়ের সামনে এসে আপনি হেরে যাবেন। আপনার অভিনয় টা রাত চোখে ধরা পড়ে যাবে।
প্রায় ১৫ দিন পর.......
এই ১৫ দিন আমি আর রিয়া একি ছাদের নিচে থেকেছি ঠিকি কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো কথাই হতো না,,, যে যার মতো থাকতাম,, অবশ্য প্রথম দিকে আমি ওর সাথে নিজে থেকে কথা বললেও ও সব সময় আমাকে ইগনোর করত। আমাকে অবহেলা করত। এক কথায় আমাকে তার বিরক্ত লাগতো। তাই এখন আর আমিও তাকে বিরক্ত করি না।
রাতে খাবার খেয়ে রুমে এসতেই রিয়া বলে উঠলোঃ সাদ,, কালকে একটু আমার এক ফ্রেন্ডের বাসায় যাওয়া লাগবে। খুব অসুস্থ। তাই একটু দেখতে যাবো।
আমিঃ আমাকেও যেতে হবে। আম্মুকে নিয়ে যাও।
রিয়াঃ না না,,, আমি একাই যেতে পারব।
আমিঃ সেকি,, একা কিভাবে যাবে! আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমায় নিয়ে যাবো।
রিয়াঃ দেখ,, তোমার সাথে আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে,, কয়েদিন পর কাগজ টা পেলেই আমরা দুজন দু রাস্তায়। প্লিজ আমি এখন ( এতোটুকু বলেই রিয়া থমকে গেল)
আমিঃ কি বেপার কি হয়েছে? এমন করতেছ কেন?(রিয়া কিছু বলতে পারছে না। শুধু আমার পিছনের দিকে তাকিয়ে কেমন যেন করতেছে)
আমি হুট করে পিছনের দিকে তাকাতেই দেখি আম্মু আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। তার মানে কি আম্মু আমাদের সব কথা শুনে ফেলেছে। পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে লাগলো।
*পরবর্তী পর্ব আগামীকাল দুপুর ২ টায় প্রকাশ করা হবে। by the grace of Allah 😍
Waiting for next part....
পূর্ববর্তী পর্ব                                                                                                             পরবর্তী পর্ব

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.