লিখেছেনঃ Md Asif
আমি যেই চলে আসার জন্য পা বাড়ালাম
সেইসময় ওদের মধ্যে একজন আমাকে পা দিয়ে বাধিয়ে মাটিতে ফেলে দিল।
আমাকে পড়তে দেখে সকলে হেসে দিল। আমি কিছু না বলে চলে আসলাম। ও হ্যা আমরা দুই ভাই। আমার বড় ভাই বিবাহিত। সে এসিপি। কিন্তু আমি কাউকে বলি না। বাসি আসার পর ভাবি বলল-
: কী ব্যাপার দেবর সাহেব, কলেজের প্রথম দিন কেমন লাগলো।
: ভাল কেটেছে জানের ভাবি।
: কিন্তু এ'কি তোমার হাতে কাটলো কীভাবে?
: কই?
: আরে ওই তো তোমার কনুইতে কেটে গেছে
: আরে সমান্য একটু ছিলে গেছে
: এটা সমান্য তাই না।
এই কথা বলে ভাবি কাঁদতে শুরু করলো।
আসলে ভাবির কোনো ছোট
ভাই নেই তাই আমাকে নিজের ছোটো
ভাইয়ের মতো ভালোবাসে।
আমিও কম বাসি না তবে ভাবির
থেকে মনে হয় কম। আমার
কিছু হলে ভাবি সহ্য করতে
পারে না। ভাবির কান্না শুনে
বাড়িতে অবস্হিত সকলে ছুটে এলো।
মা ভাবির কাছে জিজ্ঞাসা করল----
: কী হয়েছে মা, কাদছো কেনো?
: দেখুন না মা ওর কতখানি কেটে গেছে
: কই। আমি তো কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
: এইযে দেখুন ( ভাবি আমার কনুইতে ইশারা করে দেখিয়ে দিলো।)
: একটু ছিলে গেছে শুধুমাত্র। আর
তুমি তার কারণে কাঁদছো।
: আমি কিছুই শুনতে চাই না মা। আপনি ফাস্ট এইড বক্সটা নিয়ে আসুন দয়া করে।
অগত্যা মা ফাস্ট এইড বক্স আনলো।
এন্টিসেপটিক দেওয়ার সময় আমার একটু
জ্বালা করছিল অবশ্য কিন্তু ভাবি যেভাবে পরম মমতায় আমাকে ব্যান্ডেজ করে
দিলো তাতে করে আমার একটুও ব্যাথা
লাগেনি। আমি আলতো করে
ভাবির চোখের পানি মুছে দিলাম।
দুপুরে ভাবি আমাকে নিজ হাতে করে খাইয়ে
দিলো। দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমানো
আমার একটা অভ্যাস। আমি ভাবির কোলে
ঘুমাতে গেলাম। আস্তে আস্তে হারিয়ে
গেলাম স্বপ্নের দেশে। রং বেরংয়ের সব স্বপ্ন
আমার ছোট্র হৃদয়ে জায়গা করে নিচ্ছিল।
মনে হয় এ ঘুম কোনো সাধারণ ঘুম
না। কালের গভীরে তলিয়ে যাচ্ছি আমি ঘুমের
আবেশে।
বিকালে ভাবি আমাকে ডেকে তুলল।
ফ্রেস হয়ে আসার পর ভাবি আমাকে কিছু মেডিসিন দিল। ইচ্ছা না থাকা সত্বেও ভাবির
কথা ভেবে খেয়ে নিলাম। তারপর বন্ধুদের
সাথে ঘুরতে বের হলাম। আমার পরিবারের
কথা আমার কিছু কাছের বন্ধু ছাড়া আর
কেউ জানে না। আমি বলিও না।
আমার সাধারণ পোশাক, তেল চুকচুকে মাথা
দেখে কেউ ভাবতেও পারে না আমি কে এবং আমার পরিবার কে।
যাইহোক সন্ধায় বন্ধুদের কাছ থেকে
বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে আসলাম। কিছু
সময় পড়লাম তারপর খেয়ে টিভি দেখে
আমার ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম।
যথারীতি ভাবির ডাকে সকালে
আমার স্বাধের ঘুমটা ভাঙ্গলো। ব্রেকফাস্ট
করে আমি কলেজের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম
আমার সেই সাধারণ পোশাক পড়ে।
কলেজে ধুকতেই তাসনিম এবং তার
বান্ধবীরা আমাকে নিয়ে মজা করা শুরু করে
দিলো। তাসনিম বললো ----
: আরে দেখ আমাদের হিরো আইসে রে
: হ্যা, আমাদের কলেজের নাম্বার ওয়ান হিরো।
: যাকে বলে হিরো আলম।
আমি ওদের কথায় কান না দিয়ে চলে
আসলাম। এভাবে আমার কলেজের
দিন চলতে থাকলো। তাসমিনদের টর্চার
কমেনি বরং আরো বেড়েছে।
আমি ওদের কথায় কিছু মনে করিনি কারণ
আমি জানতাম আমাকে
এসব সহ্য করতে হবে।
একদিন কলেজের কৃষ্ণচূড়া গাছের
নিচে বসে হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস
" তিথির নীল তোয়ালে " পড়ছিলাম
সেই সময় আমার সামনে কেউ একজন
এসে দাড়ালো। আমি উপড়ের দিকে
তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়। কারণ যেখানে
কোনো ছেলে আমার সাথে ঠিক মত
কথা বলে না। আমাকে দেখলে এড়িয়ে
চলে সেখানে একটা মেয়ে কিনা।
ভাবতেই কেমন লাগে। তারপর
আগত রমণী বলল........