লিখেছেনঃ Md Asif
ব্রেকফাস্ট করে রেডি হয়ে
কলেজের উদ্দেশ্যে
বের হলাম। মোহনার বর্ণিত
পুকুরপাড়ে যেয়ে দেখি মোহনা আজকে খুব সুন্দরভাবে সেজেকে।
একেবারে পরির মতো লাগছে।
: এহেম এহেম। ( কাশি দিলাম)
: তাহলে আছসো তুমি।
: না আসলে কী আর কোনো উপায় আছে।
: তোমাকে আমার কেমন লাগে ?
: হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন করছো?
: তুমি তো জানো আমি কারোর
সাথে প্রেম করি না কিন্তু
একজনকে আমার খুব ভালো লাগে।
মানে আমি তাকে ভালবাসি।
: কে সে সৌভাগ্যবান?
: সে আর কেউ না। সে হলো তুমি
: এই বছরের শ্রেষ্ঠ জোকস এইটা।
: আমি কিন্তু মজা করছি না। আমি সিরিয়াস
: আএএএ। এইটা কী বললে তুমি।
: আমি সত্যিই তোমাকে ভালবাসি সেই প্রথম
দিন থেকে যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি



: আমার মতো একটা ক্ষ্যাত ছেলেকে করুণা
করছো।
: তোমার কী মনে হয় আমি তোমাকে করুণা করছি। আমি কিন্ত তোমাকে সত্যি ভালবাসি। আমাকে বিশ্বাস করো।
: দেখো মোহনা, আমি তোমাকে একজন ভালো বন্ধু মনে করি। এর বেশি আর কিছু না।
: আমি তোমাকে শেষ বারের মতো বলছি
আমি তোমাকে ভালবাসি।
: আমি দুঃখিত।
এইবার মোহনা নিজের ব্যাগে কী যেন
খুজছে। পেয়েছে মনে হয়। ওমা গো এটা দেখি
একটা চাকু। সাইজটা অনেক বড়।
আমার দিকে এগিয়ে আসছে সাথে হাতে চাকু
নিয়ে। কিসের সাথে বেধে নিচে পড়ে
গেলাম। এটা তো গাছের শিকড়। হাই রে
শেকড় শেষে তুইও আমার
সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলি। তোকে তো
আমি পরে দেখে নেবো।
আগে এই গুন্ডিটাকে দেখে নিই।
তারপর মোহনা আমাকে টেনে তুলে
একটা গাছের সাথে চেপে ধরল
যেমন একটা
সাপ তার শিকারকে আষ্টেপৃষ্ঠে
চেপে ধরে।
মোহনা আমার বুকে
চাকু ধরে এবং বলল---;
: ভালবাসা দিবি কিনা বল?
: তুমি আমাকে তুই করে বলছো কেনো।?
: রাখ তোর তুই। ভালবাসবি কিনা বল?
: দেখো এটা আমার পক্ষে সম্ভব না।
: কেনো সম্ভাব না ( কোমল সুরে)
: প্রথমত, আমি গরীব ঘরের ছেলে।
তুমি ধণী লোকের মেয়ে।
তারওপর আবার
তুমি সেইরকম সুন্দরি।
আমি তোমার যোগ্য না।
তুমি এটা বুঝতে চেষ্টা করো।
: আমি কিছু বুঝতে চাই না।
আমি তোমাকে
ভালবাসি আর তুমিও
আমাকে ভালবাসবে।
এটা শেষ কথা।
: তুমি একটু বোঝার চেষ্টা করো মোহনা।
: আমি কিছু জানিনা আর বুঝিনা। আমাকে যদি ভাল না বাসো তাহলে কিন্তু আমি নিজেকে
এই চাকু দিয়ে শেষ করে দেবো।
দেখেন এইটা কী রকম জ্বালা।
এখন আমি
কী করবো। যদিও আমি মোহনাকে
পছন্দ করি কিন্তু আমার
একটা অতিত আছে।
মনের ভিতর থেকে একটা
বাধা আসছে। আবার না বলতে
পারছি না কারণ আমি জানি
মোহনা কেমন রাগি। যখন
তখন কিছু করে ফেলতে পারে।
দেখি বোঝাতে পারি কীনা।
: এই কি করছো হাত কেটে যাবে তো।
: যাক কেটে তাতে তোমার কী। তুমি তো আমাকে ভাল বাসোই না।
: দেখো পাগলি, এমন করে না। যখন তখন কিছু হয়ে যেতে পারে।
: হোক।
এই বলে মোহনা নিজের হাত
কাটতে চেষ্টা করছে আর আমি
বারবার হাত সরিয়ে দিচ্ছি।
মোহনা এমন জেদ করছে যেন
আজ সে হাত কাটবেই কাটবে।
এইভাবে মোহনাকে বাধা দিতে যেয়ে অসাবধানবসত আমার চাকু আমার
লেগে কিছুটা কেটে যায়। অল্প কেটেছে
কিন্তু রক্ত পড়ছে বেশ।
এইবার শুরু হলো আরেক মহাকাব্য।
মোহনা আমার কাটা জায়গা ধরে
কান্না শুরু করলো। এমন কান্না
শুরু করলো যেন আমার থেকে
বেশি লাগছে ওর। একেবারে
সিনেমার মতো হলো যখন
নায়কের হাত কেটে যায় তখন
নায়িকা নিজের শাড়ি আচল ছিড়ে
যেমন বেধে দেয় সেইরকম মোহনাও
নিজের সালোয়ারের
ওড়ানা ছিড়ে আমার হাতে বেধে দিলো।
এই পাগলিটাকে নিয়ে
যে কী করি আমি। একেবারে পাগল।
অনেকক্ষণ পর মোহনা মুখ খুলল----
: খুব লেগেছে তাই না।
: না, একটুও লাগেনি।
: সত্যি বলছো তো।
: হুম। আচ্ছা এমন পাগলামির কী
কোনো মানে আছে তুমি বলো?
: আমি না তোমাকে খুব ভালোবাসি।
: আমিও তোমাকে পছন্দ করি কিন্তু
আমার মন যে সায় দিচ্ছে না।
: কেন?
: আমার একটা কালো অতিত আছে।
যেটা আমি ভুলতে চাচ্ছি কিন্তু পারি না।
: আমাকে বলো তুমি। জানোনা কষ্ট শেয়ার করলে মন হালকা হয়।
: তুমি বলছো।
: হ্যা বলছি। তুমি আমাকে বলো।
: বলার আগে তোমাকে একটা কথা বলছি। আমি তোমাকে অনেক কিছু লুকিয়েছি আমার সম্পর্কে। আমাকে প্লিজ ভুল বুঝো না।
: আচ্ছা ঠিক আছে।
: শোন তাহলে ----
আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। আমরা তখন চট্টগ্রামে থাকি। আমার
আব্বুকে সম্প্রতি........