লিখেছেনঃ Md Asif
: বলর আগে তোমাকে একটা কথা বলছি। আমি তোমাকে অনেক কিছু লুকিয়েছি আমার সম্পর্কে। আমাকে প্লিজ ভুল বুঝো না।
: আচ্ছা ঠিক আছে।
: শোন তাহলে ----
আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। আমরা তখন চট্টগ্রামে থাকি। আমার
আব্বুকে সম্প্রতি পদোন্নতি দেওয়া হয়।
তিনি সেনা বাহিনীর মেজর জেনারেল পদে উন্নিত হন।
এর মধ্যে মোহনা বাধা দিল ----
: দাড়াও তোমার বাবা মেজর?
: হুম।
: আমাকে আগে বলোনি কেন তুমি ( অভিমানী সুরে)
: ঘটনা বলার আগে তোমাকে বলেছিলাম আমি তোমার কাছ থেকে অনেক কিছু গোপন করেছি।
: হুম, বলেছিলে।
: তাহলে এখন অভিমান করার কী আছে।
: আচ্ছা বাবা,ঠিক আছে। তুমি বলতে থাকো।
: যেখান থেকে বলছিলাম ----
আব্বু পদোন্নতি পাওয়ায়
আমাদের কোনো খুশির
সীমা ছিলো না। আমরা একটা
গেট টুগেদারের আয়োজন
করি পারিবারিক ভাবে।
সেখানে আব্বুর সাথে যারা
কাজ করতো তারা সহ
আমাদের কিছু আত্বীয় এসেছিলো।
আমাদের পার্টিতেই
আমি প্রথম দেখেছিলাম নিশাতকে।
: একমিনিট, নিশাত কে?
: আমার কালো অতীত।
: ও আচ্ছা। একটা কথা বলবো?
: আমি কথার ভিতরে প্রশ্ন করছি বলে তুমি রাগ করছো না তো?
: আরেহ না। কোনো সমস্যা না।
: আচ্ছা তুমি বলো।
: ওকে।
" নিশাত " হলো আমার আব্বুর
কলিগের মেয়ে। নিশাতের
বাবাও একজন মেজর।
নিশাত দেখতে ছিল অপরুপ সুন্দরি।
প্রথম দেখায় আমি আমার
হৃদয়ের রাণী হীন রাজ্যে তাকে
রাণি বানিয়ে ফেলি।
আব্বু নিশাতের সাথে আমার
পরিচয় করিয়ে দেয়।
জানতে পারি আমরা
সেম ক্লাসে পড়ি তবে আলাদা স্কুল।
ওই পার্টিতে নিশাতের
সাথে অনেক কথা বলি।
এক ফাকে আমি ওর
নাম্বারটা নিয়ে নিই এবং
আমারটা আমি ওকে দিই।
নিশাত কে বলি রাত্রে আমি কল দিবো।
পার্টি শেষ হলে ওরা চলে যায়।
আমি আমার ভিতরে খালি অনুভব করি।
তবে কী এটাই ভালবাসা।
রাত্রে আমি নিশাতের নাম্বারে কল দিই।
একবার রিং হলেই ধরে ফেলে।
মনে হয় আমার কলের অপেক্ষায় ছিলম।
: আস্সালামুআলাইকুম ( আমি)
: ওয়ালাইকুম আস্সালাম।
: কেমন আছো তুমি?
: আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো?
: আমিও ভালো আছি। কী করো এখন তুমি?
: এইতো তোমার সাথে কথা বলছি।
: ওহ, আচ্ছা।
এইভাবে আমাদের কথা চলতে
থাকে রোজ।
আমি আগের থেকে আরো
বেশি পরিমাণে নিশাতের
প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি।
নিশাতের কথা শুনে আমি
বুঝতে পারি নিশাতও আমার
ওপর দুর্বল। কিন্তু একটা
কথা আছে না। মেয়েদের
বুক ফাটে তবুও মুখ ফােটে না।
আমারও লজ্জা করতো বলতে।
এইভাবে কয়েকমাস কেটে গেলো।
একদিন দেখলাম নিশাতকে
কেউ একজন প্রপোজ করছে।
বুকের ভিতর যেন কেমন করে উঠল।
কিন্তু নিশাত তার প্রপোজ গ্রহণ করেনি।
আমি নিশ্চিত নিশাত
আমাকে ভালবাসে। কারণ যে
প্রপোজ করেছে সে দেখতে
স্মার্ট এবং ধণী ঘরের ছেলে।
আমিও বা কম কিসে।
কিন্তু বুঝলাম এইবার লাজ
লজ্জা বিসর্জন দিয়ে তাকে
প্রপোজ করতে হবে।
এইভাবে নানা চিন্তায় দিনটা
কেটে গেলো। আমি ভাবছি কীভাবে
নিশাতকে প্রপোজ করবো। ওর সামনে
গেলে তো আমার কথা মুখ দিয়ে
বের হয় না। ভাবতে ভাবতে কখন যে
ঘুমিয়ে গেছি মনে নায়।
সকালে আম্মুর ডাকে আমার ঘুম ভাঙ্গলো।
ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট করে স্কুলের
উদ্দেশ্যে মানে নিশাতের সাথে দেখা করতে
বের হলাম। দুর থেকেই দেখতে পেলাম
আমার পরিটা আসছে।
আজকে ওকে খুব সুন্দর লাগছে
দেখতে। আমার কাছে আসতেই বড়
রকমের একটা ক্রাশ খেলাম।
: মুখ বন্ধ করো মাছি ধুকবে
: ও হ্যা। কী বলছো যেন।
: আরে কী দেখো এমন করে?
: ক কক কই কিছু না তো।
: আমি দেখলাম তুমি আমার
দিকে তাকিয়ে আছো
: আমার পরিটাকে দেখছি ( মনে মনে)
: কিছু বলছো।
: না তো।
: ওহ, চলো হাটি।
: আচ্ছা, চলো।
তারপর আমি আর নিশাত
হাটতে লাগলাম। হাটতে হাটতে
আমরা একটা ফুচকা দোকানের সামনে
আসলাম। নিশাত বললো ----
: চলো না ফুচকা খাই
: আচ্ছা চলো।
আমি ভাবলাম এই একটা সুযোগ।
একটা এক্সট্রা অর্ডিনারি প্রপোজ করে
নিশাত কে চমকে দেবো। আমি একটা ফুচকা
নিয়ে নিশাতের সামনে হাটু গেড়ে বসে
বলতে শুরু করলাম আমার মনের জমানো কথা
" ওগো ললনা, তুমি কী হবে আমার রাণী হীন রাজ্যের রাণী, হবে কী আমার সকালের ঘুম ভাঙ্গানোর এলার্ম, হবে কী রাত্রে চন্দ্র বিলাসের সাথি, রাত্রে ঘুমানোর কোলবালিশ। "
নিশাত ফুচকা টা নিয়ে খেয়ে নিলো।
এবং বললো ---
: আমি হব, তোমার হব এবং তোমারি হব।
(এটা সিনেমা না তাই কেউ কাউকে জড়িয়ে
ধরে নি।)
এইভাবে আমাদের পথচলা শুরু হলো।
রোজ একসাথে ঘুরে
বেড়ানো, ফুচকা খাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। নিশাত আমাকে
খুব কেয়ার করতো। একেবারে
পাক্কা গিন্নির
মতো আমার উপর নিজের
কথা খাটাতো।
আমি না শুনলে আমার
উপর অভিমান করতো।
আমাকেও অভিমান ভাঙ্গাতে হতো।
এইবার বাস্তবে আসলাম মোহনার প্রশ্ন শুনে। মোহনা বললো ----
: তুমি কী নিশাত কে খুব ভালবাসতে?
: হুম। খুব ভালবাসতাম আমি।
: এই পর্যন্ত যা শুনলাম তাতে বুঝলাম তুমি আর নিশাত সুখে ছিলে।
: হুম ছিলাম তো।
: তাহলে কালো অতীত আসলো কোথা থেকে?
: পুরোটা না শুনলে বুঝতে পারবে না।
: বলো, শুনছি।
: আচ্ছা।
" মানুষের জীবনে সুখ চিরদিন থাকে না। বছর খানিক আমার জীবনটা স্বপ্নের মতো কাটলো। কারণ হলো নিশাত। কিন্তু.......