Type Here to Get Search Results !

ভালোবাসা দিবি কিনা বল (পার্টঃ৮)

  লিখেছেনঃ Md Asif


আসার সময় যদি সোহেল
পিছন ফিরে একবার
তাকাতো তাহলে সে যেটা
দেখতো হয়তো সেটার জন্য
সে প্রস্তুত থাকতো না। কারণ
সেই সময় নিশাত সেই রাস্তায়
বসে কাদতেছিলো।
নিশাতের এত কান্না
পাচ্ছিল যে সে
কাঁদতে পারছিলো না শুধু
বসে ফোঁপাচ্ছিলো।
ডান হাত সে রাস্তায়
আঘাত করছিলো
বারবার কারণ সে
এই ডান হাত দিয়েই
সোহেলের মুখে চড়
মেরেছে। নিশাত নিজেকে
খুব বড় অপরাধী ভাবছে
কারণ সে সোহেলকে
ধোকা দিয়েছে কিন্তু
এইছাড়া তার কাছে আর
কোনো রাস্তা ছিল না।
নিশাতের এমন অনুশোচনার
কারণ কী জানেন।
তাহলে নিশাতের মুখেই শুনেন।
"'' আমি এটা কী করলাম।
আমার কলিজাকে আমি
নিজেই আঘাত করলাম।
নিজেই কষ্ট দিলাম। এই ছাড়া
বা আর কীইবা করতাম আমি।
আমার এই ক্ষণিকের জীবনে
আমি সোহেলকে জড়াতে চাই না।
বুঝছেন না তো? তাহলে বুঝিয়ে বলি আপনাদের।
কয়দিন আগে আমি স্কুল
থেকে বাড়িতে ফিরে আছি।
অনেক দুর্বল লাগছিলো।
তারপর সবকিছু কেমন
জানি ঘুরাচ্ছিলো। আর কিছু মনে নাই।
আমার যখন হুুশ ফিরে
আছে তখন নিজেকে
সাদা কাপড় বেষ্টিত জায়গায় দেখলাম।
আচ্ছা আমি কী মারা গেলাম।
মৃত্যর অমোঘ সত্য তাহলে
আজ আমার জীবনে
প্রতিফলিত হলো।
কেউ যেন এগিয়ে আসছে।
আরেহ এতো আমার আম্মু।
একটু খেয়াল করে দেখলাম আমি তো হসপিটালে আছি।
তার মানে আমি এখনো
এই সুন্দর ধরণীতে অবস্হান
করছি মারা যায় নি।
আম্মু এসেই কান্না শুরু
করে দিলো। আমি বললাম ------
: কাঁদছো কেন আম্মু? আমার কী কিছু হয়েছে?
: না, আম্মু তোমার কিছু হয়নি। তুমি ঠিক আছো।
: তাহলে তুমি কাঁদছো কেনো?
: তুমি অসুস্হ ছিলে তো তাই।
: আমি তো ঠিক আছি। এখন আর কেঁদো না
: আচ্ছা।
( তবুও আম্মু কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো।)
মা মুখে কিছু না বললেই
আমি ভালোভাবেই বুঝতে পারছি
আমার বড় একটা কিছু হয়েছে।
আমার চোখে ঘুম
হানা দিচ্ছিল তাই ঘুমিয়ে গেলাম।
বিকালের দিকে একটু
বেটার লাগছিলো তাই
বাইরে বের হলাম।
কাদের যেন কথার
আওয়াজ পাচ্ছি।
ওইতো আম্মু। আম্মু আর
ডাক্তার আঙ্কেল কথা বলছে।
ডাক্তার আঙ্কেল খুব অমায়িক মানুষ।
আমাকে খুব স্নেহ করেন।
দেখি ওনারা কী বলেন।
: আমার মেয়ের কী বাচার কোনো রাস্তা নেই ( মা)
: অত্যন্ত দুঃখপীড়িত ভাবে বলছি।
কোনো রাস্তা নেই। নিশাত আর মাত্র কয়েকমাসের অতিথি এই জগতের। ( ডাক্তার)
এটা আমি কী শুনছি।
আমি তাহলে মারা যাবো।
আমার কী হয়েছে।
আমি মারা গেলে আমার
সোহেলের কী হবে। ওর খেয়াল রাখবে কে। আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না।
: তাহলে আমরা কিছু করতে পারবো না।( মা)
: নাহ, আর কিছু করার নেই।
ক্লোন ক্যান্সার দ্রত নিশাতের
শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে।
এখন আমরা অপারেশন
করতে পারি তবে বাচার সম্ভাবনা
শতকরা ১%। সো এখন আপনাদের ইচ্ছা। ( ডাক্তার)
: আমরা অপারেশন করতে চাই।
আমাদের কলিজার টুকরাকে
আমরা হারাতে পারবো না।
: আপনাদের ইচ্ছা।
তবে অপারেশন সপ্তাহ
খানিক পরে হবে। একটা
কথা এইসব কথা নিশাত
মামুনিকে বলবেন না
কারণ ও ক্যান্সারের কথা
শুনলে মানসিকভাবে দুর্বল
হয়ে পড়বে। যেটা
এখন খুবই বিপদজনক।
এইসময় সবচেয়ে বেশি
দরকার মনের জোড়।
আর হ্যা ওকে সবসময়
হাসিখুশির ভিতরে রাখবেন।
: আচ্ছা ( কান্নামিশ্রিত সুরে বলল মা)
এগুলো শুনে তো আমার
পায়ের তলার মাটির সরে গেলো।
আমার কপালে এটাই ছিল।
কী আর করার আছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা
আমার তাকদিরে যেটা
রেখেছেন সেটা হবেই।
আমি নিজেকে নিয়ে চিন্তিত না।
আমি চিন্তিত সোহেল কে নিয়ে।
আমি জানি সোহেল আমাকে
নিজের চেয়েও ভালবাসে।
আমার কিছু হলে সোহেলের
অবস্হা কী হবে জানি না।
সোহেলকে বাচাতে হলে
ওর মনে আমার প্রতি ভালবাসার পরিবর্তে ঘৃণার জন্ম দিতে হবে তাহলে
আর আমার কথা ওর মনে পড়বে না ।
আমার কষ্ট হলেও
সোহেলকে বাচানোর জন্য
আমাকে সবকিছু করতে হবে। ""
হ্যা, নিশাত নিজের
ভালবাসার মানুষকে
বাচানোর জন্যই নিজেকে
সোহেলের কাছে ঘৃণার
পাত্রে পরিনত করে।
সে নিজের ভালবাসা
কে ওই সবকিছুই করেছিলো
যেগুলো করা দরকার।
নিশাত কিন্তু কম কষ্ট পাইনি।
সোহেলকে দেওয়া
প্রত্যেকটা কষ্টের আঘাত
সেও সমান পেয়েছে। এমন কী বেশি।
অন্যদিকে, সোহেল
পাগলের মতো হয়ে যায়।
সবসময় নিজেকে ঘরের
মধ্যে আটকে রাখতো।
কারো সাথে কথা বলতো না।
কাঁদতে কাঁদতে নিজের
চোখকে বানিয়ে অনেক
ফুলিয়ে ফেলেছে। ওকে দেখতে
এখন অদ্ভুত লাগে।
একবার নিজের
হাতের রগ কাটতে চেয়েছিলো
কিন্তু সোহেলের আব্বু দেখে
ফেলেছিলো। তাই সে যাত্রায়
সোহেল রক্ষা পায়।
বাড়ির লোক সোহেলের
এমন পরিবর্তন মেনে নিতে পারে নি।
সোহেলর আম্মু
সবসময় সোহেলের সাথে
থাকতো কারণ সে একবার
আত্নহত্যার চেষ্টা করেছে।
সোহেল এমন মানসিক
আঘাত সহ্য করতে পারে নি।
তাই সে মানসিক ভারসাম্য
হারিয়ে ফেলে।
এর ভিতরে আবার
সোহেলের বাবাকে
বদলি করা হয় অন্য একটা রেন্জে।
ভালো চিকিৎসার জন্য
সোহেলকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পরিবারের ভালবাসায়
এবং সেবায় সোহেল আস্তে
আস্তে ভালো হতে থাকে।
এবং একসময় সোহেল ভাল হয়ে যায়।
কিন্তু এর ভিতরে কেটে যায় ৫ মাস।
কিছু মাস আগে :
অপরদিকে নিশাতের
অপারেশনের দিন ঘনিয়ে আসছে।
সে একটিবারের জন্য সোহেলকে
দেখতে যায় কিন্তু দেখে
তাদের বাড়ি শুন্য পড়ে আছে।
বিমর্ষ হৃদয় নিয়ে
সে বাড়ি ফিরে আছে এবং আব্বুর
কাছ থেকে জানতে পারে
সোহেলের আব্বুর বদলি হয়ে গেছে।
নিশাত ভাবে শেষ দেখাটাও হলো না।
( একটা দীর্ঘনিশ্বাস বেড়িয়ে
আছে অনেক কষ্ট আর বেদনার সাক্ষী হয়ে)
আজকে নিশাতের অপারেশন কিন্তু.........
চলবে....

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.