লিখেছেনঃ Md Asif
এইবার মোহনা কান্না থামালো।
তারপর বলল----
: আমি কাঁদলে তোমার কেন কষ্ট হয়?
: আমি তোমাকে ভালবাসি তাই
: আচ্ছা, একটা কথা বলি, তুমি আমাকে কেন ভালবাসো?
: আজকে এইসব বলছো কেন?
: কেন ভাল লাগছে না আমার কথা
: আচ্ছা ঠিক আছে, ভালবাসি তাই ভালবাসি। এইবার
ঠিক আছে।
: হুম। আচ্ছা তুমি তো নিশাতকে
ভালবাসতে না। আর
এখন আমাকে ভালবাসো কেন?
নিশাতের কথা শুনে আমার মনটা
খারাপ হয়ে গেলো। চোখের সামনে বিশ্বাসঘাতকের
ছবি ভেসে উঠলো।
মোহনাকে বললাম ---
: যখন মায়া বাড়িয়ে
লাভ হয় না তখন মায়া
কাটাতে শিখতে হয়।
বলে চলে আসলাম।
আর কথা বলতে পারছি না।
ওখান থেকে চলে আসলাম।
মোহনা অবশ্য কয়েকবার
সেকেছিলো কিন্তু আমি
চলে আসলাম।
কেন যে অতীত মনে
করিয়ে আমাকে কষ্ট
দেয় আমি বুঝিনা।
অন্যদিকে মোহনা ভাবলো
আমি তো শুধু একটু মজা করছিলাম।
জানতাম না সোহেল
এত কষ্ট পাবে। সব আমার
জন্য হলো।
এইবলে মোহনা কান্না
শুরু করে দিলো।
এমন সময় মোহনার
বান্ধবী তাবাস্সুম আসলো।
মোহনার সবচেয়ে
কাছের বান্ধবী হলো তাবাস্সুম।
মোহনা সব কথা তাবাস্সুমকে বলে। সোহেলের সাথে
রিলেশনের কথাও তাবাস্সুম জানে। রিলেশনের কথা অন্য
কেউ জানে না। তাবাস্সুম বললো -----
: কী হলো মোহনা কাঁদছিস কেন?
: আমি সোহেলকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি
: কীভাবে? একটু খুলে বল তো?
তারপর মোহনা সব বললো।
সব শুনে তাবাস্সুম বললো -----
: তুই কিন্তু কাজটা ঠিক করিসনি
: আমি কী ইচ্ছা করে করেছি।
আমি তো একটু
মজা করছিলাম ( কেদেঁ কেদেঁ)
: আহ, কাঁদিস না। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
: তাই যেন হয়।
: সব ঠিক হয়ে যাবে দেখিস।
এখন ক্লাসে চল।
: চল।
তারপর মোহনা আর
তাবাস্সুম ক্লাসে গেলো।
তাবাস্সুমের কথায়
কিছুটা ভরসা পেয়েছে মোহনা।
অন্যদিকে সোহেল
বাসায় মন খারাপ করে
বসে আছে। তার মনে
এখন শুধুই নিশাতের
অবাধ বিচরণ। সোহেল
কিছুতেই নিজের মন
থেকে নিশাতকে সরাতে পারছে না।
মাথায় হাত দিয়ে চিৎকার
করে উঠে। হঠাৎ প্রচন্দ
ব্যাথ্যা শুরু হয় সোহেলের মাথায়।
আবারও সোহেল চিৎকার করে উঠে।
ফ্লোরে পড়ে যায় সোহেল।
তার চোখে এখন ঘুম আসছে।
রাজ্যের ঘুম তার চোখে ভাসছে।
সোহেলের চিৎকার শুনে
সোহেলের ভাবি আর মা
ছুটে আসে।
এসে তারা দেখে সোহেল
ফ্লোরে পড়ে আছে।
তারাতারি করে তাকে
নিকটস্থ ক্লিনিকে নেওয়া হয়।
ডাক্তার সোহেলের মাথায়
সিটি-স্কান করে এদিকে
সোহেলের এইরকম
অবস্হার কথা শুনে
বাবা আর ভাইয়া ছুটে আসে।
ডাক্তার সিটি স্কানের
রিপোর্ট দেখে এবং বলে --------
: ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
বেশি চিন্তা করেছে
আর মস্তিষ্ক এটা নিতে
পারেনি। তাই মাথা
ব্যাথার কারণে
সেন্সলেস হয়ে যায়।
: আমার ছেলে ঠিক
হয়ে যাবে তো ডাক্তার।( মা)
: চিন্তা করবেন না ম্যাম।
সব ঠিক হয়ে যাবে
: কত সময় লাগতে পারে ( ভাবি)
: পুরো সুস্হ হতে এক
দুই দিন সময় লাগতে পারে।
তবে খেয়াল রাখতে হবে
বেশি উত্তেজিত হয় না
যেন তাহলে কিন্তু আবার
মাথা ব্যাথ্যা শুরু হবে।
: আচ্ছা আমরা দেখবো ওকে ( ভাবি)
: আমি কিছু মেডিসিন
দিচ্ছি সেগুলো প্রপারলি
দিবেন ওকে।
তাহলে তাড়াতাড়ি
সুস্হ হবে ইনশাল্লাহ।
: আচ্ছা।
ঘুম ভাঙ্গলো আমার।
একি আমি তো হসপিটালে।
আমার কি হয়েছিলো।
: ভাবি ভাবি ( আমি)
ভাবি বাইরে থেকে হন্তদন্ত
হয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো।
আমি বললাম-----
: আমার কী হয়েছে ভাবি?
: তোমার কিছু হয়নি।
মাথা ব্যাথ্যার কারণে
তুমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলো।
: আমার এখানে একদম
ভালো লাগছে না। আমি বাড়ি যাবো।
: তোমার ভাইয়া ডাক্তারের
সাথে কথা বলেছে।
ডাক্তার বলছে বিকালে
নিয়ে যাওয়া যাবে।
: তাড়াতাড়ি করো।
: হুম।
তারপর বিকালে
বাড়ি চলে আসলাম।
বাইরে ঘুরতে যাবো কিন্তু
ভাবি কিছুতেই যেতে দিবে না।
আমি বললাম----
: এইভাবে কী শুয়ে থাকা যায়
: কিছু করার নাই।
: আমি কী করবো এখন।
একদম ভাল লাগছে না।
: আচ্ছা তুমি আমার
কোলো মাথা রাখো আমি
তোমায় গল্প শোনায়।
: আচ্ছা।
তারপর ভাবির কোলে
গল্প শুনতে শুনতে কখন
যে ঘুমিয়ে পড়েছি
এটা খেয়াল নাই।
রাত্রে যথারীতি ভাবির
ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো আমার।
তারপর ডিনার করে
আবার ঘুমের দেশে
হারানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তখন মোহনার মুখটা
চোখের সামনে ভেসে উঠলো।
ইশ, আজকে সারাদিন
মোহনার সাথে কথা বলিনি।
খুব দেখতে ইচ্ছা করছে
পাগলিটাকে।
আমার মোবাইল টাও
পাচ্ছি না। কোথায় যে রাখলাম।
নাহ, কোথাও নেই।
কালকে তো কলেজে যাচ্ছি।
কালকে মোহনার সাথে
কথা বলবানে।
আস্তে আস্তে ঘুমন্ত পুরিতে
হারিয়ে গেলো। সেখানে
রয়েছে তার ঘুমন্ত রাজকন্যা।
বাস্তবে যে কীনা মোহনা।
ঘুমাতে থাকুক সোহেল।
আমরা বরং মোহনার
কাছ থেকে ঘুরে আসি।
আজকে সারাদিন
সোহেলের সাথে কথা
বললাম না। কল দিলাম
কিন্তু মোবাইল বন্ধ।
সব আমার দোষ।
আমি কেন নিশাতের
কথা বলতে গেলাম।
এই বলে মোহনা
কাদতে লাগলো।
কাঁদতে কাঁদতে কখন
যে ঘুমিয়ে পড়েছে
সে নিজেই জানে না।
আজকে আর আমাকে
ঘুম থেকে ডেকে
দেওয়া লাগলো না আমি
নিজেই উঠলাম।
ফ্রেশ হয়ে বাইরে গেলাম।
দেখি কিচেনে ভাবি
ব্রেকফাস্ট তৈরি করছে।
আমাকে দেখে ভাবি বললো ---
: কী ব্যাপার, আজকে ডাকা লাগলো না যে
: এমনি ঘুম ভেঙ্গে গেছে
: আচ্ছা, তুমি বসো। আমি ব্রেকফাস্ট তৈরি করে দিচ্ছি।
: আচ্ছা।
তারপর সবাই মিলে
ব্রেকফাস্ট করলাম।
তারপর আমি কলেজে
যাওয়ার জন্য রেডি হলাম।
আমার রুম থেকে বের হলাম তখন ভাইয়া বলল---
: সোহেল
: জ্বী, ভাইয়া
: এই অবস্হায় কলেজে যেতে হবে না
: আমি তো ভাল আছি
: দরকার নাই। কালকে যাস
: কিন্তু
: কোনো কিন্তু না। যেটা বলছি সেটা কর
: আচ্ছা।
অগত্যা আমাকে আবার
রুমে ফিরে আসতে হলো।
আমি ভাইয়াকে বেশ
ভয় করি। তাই আর কী করা।
মোহনাকে আজকেও
দেখতে পারবো। এখন বাড়ি
থেকে বের হতেও দিবেনা।
আজকে দিনটা যেন
কাটছেই না।
অবশেষে অনেক
কষ্টের মাধ্যমে দিনটা
পার করলাম।
আজকে কলেজে যাব।
ব্রেকফাস্ট করে রেডি
হয়ে কলেজে যাব
এইসময় ভাইয়া আমাকে
একটা স্মার্টফোন দিল। ভাইয়া বলল-----
: তোর মোবাইল পড়ে
ভেঙ্গে গেছে। তাই নতুন
একটা কিনে দিলাম।
: আচ্ছা।
বাইক স্টার্ট করে কলেজের
জন্য বের হলাম। কলেজে
গ্যারাজে বাইক রেখে
মোহনাকে খুজতে লাগলাম।
ওই তো মোহনা।
কিন্তু একি দেখছি আমি।....
।
।
চলবে........