Type Here to Get Search Results !

ভালোবাসা দিবি কিনা বল (পার্টঃ১১)

  লিখেছেনঃ Md Asif


বাইক স্টার্ট করে কলেজের
জন্য বের হলাম। কলেজে
গ্যারাজে বাইক রেখে
মোহনাকে খুজতে লাগলাম।
ওই তো মোহনা।
কিন্তু একি দেখছি আমি।
নিজের কী অবস্হা করেছে সে।
মোহনার দিকে তাকানো
যাচ্ছে না। চোখগুলো
কোটরে ধুকে গেছে, চোখের
নিচে কালো হয়ে গেছে।
মুখটা একেবারে শুকনা।
মনে হচ্ছে একটু শুকিয়ে গেছে।
দুই দিনেই নিজের এই অবস্হা নিজের।
সব আমার দোষ।
আমি যদি চলে না
আসতাম তাহলে ও নিজের
এই অবস্হা করতো না।
অবশ্য আমার কোনো
দোষ ছিল না। নিশাতের কথা শুনে
নিজেকে সামলাতে পারিনি।
সত্যি বলতে কী, যদিও নিশাত
আমাকে ধোকা দিয়েছে
তবুও ওর জন্য এখনো
আমার ভালবাসা রয়েছে।
প্রথম প্রেম বলে কথা।
যখনি ওর কথা মনে হয় তখন
ওর সাথে কাটানো ভালো
সুখ স্মৃতিগুলো আমার
চোখে ভেসে ওঠে সাথে
শেষ দিনের কষ্টগুলোও।
এইদুটো আমাকে কুড়ে কুড়ে কষ্ট দেয়। কথাগুলো ভাবতে
ভাবতে মোহনার কাছে
চলে আসলাম। মোহনার কাধে হাত দিলাম।
ও কেপে উঠলো।
তারপর পিছনে তাকিয়ে
আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরলো।
জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
আমাকে এত শক্ত করে
জড়িয়ে ধরেছে যেন মনে
হচ্ছে ছেড়ে দিলে আমি
পালিয়ে যাবো। ওকে ছাড়িয়ে
দিয়ে ওর চোখের লবণাক্ত
পানি মুছে দিলাম।
বললাম -----
: কাঁদছো কেন পাগলি?
: সব আমার দোষ।
আমি তোমাকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।
তাই বলে আমাকে ছেড়ে
চলে যেওনা। আমি আর এমন করবো না।
: আরে কীসব বলছো, আমি তোমাকে কেন ছেড়ে যাবো?
: তুমি আমার ওপর রাগ করেছো তাই না?
: আমি তোমার ওপর রাগ কেন করবো?
: তাহলে আমার সাথে দুইদিন কথা বলনি কেন?
তারপর আমি মোহনাকে
সবকিছু খুলে বললাম।
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত।
এটাও বললাম, মোবাইলাটা
ভেঙ্গে গিয়েছিলো।
মোহনা শুনে তো আবার
কান্না শুরু করে দিলো।
মেয়েটা এত কাঁদে কেমনে।
আমি বাপু বুঝি না।
যাইহোক অনেক
কষ্ট করে মোহনার
কান্না থামালাম।
তারপর দুজনে মিলে ক্লাস করতে গেলাম।
এইভাবেই আমাদের
খুনশুটিময় ভালবাসা
খুব ভালভাবেই চলছিল।
একটা কথা আমি যেহেতু
এখন ক্ষ্যাত হয়ে চলি না।
তাই এখন আমার অনেক বন্ধু।
তাদের সাথেও আড্ডা দিতে
দিতে সময় যে কখন চলে যায় খেয়ালই থাকেনা।
এখন আর তাসনীম আমাকে
অপমান করেনা তবে আমার দিকে
কেমন করে তাকায় । এই তাকানোর
মানে আমি বুঝি। হয়তো এখন আমার স্মার্টনেস দেখেছে তাই।
তবুও এইসবে আর জড়াতে চাই না।
কেন না আমার জীবনে
তো একজন জুড়ে আছে।
একদিন সকালে আমি
কলেজে আসতেছিলাম।
মোহনাও ছিল আমার সাথে।
সেই সময় তাসনীম হঠাৎ
আমার সামনে এসে দাড়ালো।
তাসনীম বললো --------
: তোমার সাথে আমার কিছু আছে
: হুম বলো
: আমি তোমার সাথে একলা কথা বলতে চাই ( মোহনার দিকে তাকিয়ে।)
মোহনা একবার আমার
দিকে আর একবার তাসনীমের
দিকে তাকালো। তারপর চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। কিন্তু আমি মোহনার হাত ধরে ফেললাম। তারপর ইশারায় দাড়াতে বললাম।
: তুমি যেন কী বলতে চাচ্ছিলে? ( আমি)
: কথাটা একটু ব্যাক্তিগত ছিল এবং গোপনীয়
: যেটা বলার সবার সামনে বলো।
: আচ্ছা তাহলে বলেই ফেলি।
আমি ওত ঘুরিয়ে পেচিয়ে
বলতে পারি না। আসলে আমি তোমাকে ভালবাসি।
আমি সেইরকম অবাক হলাম।
মেয়েটা বলে কী।
অবশ্য বড় লোকের সুন্দরি মেয়েরা যেমন হয়।
: এইসব কি বলছো তুমি।
একটা ক্ষ্যাতকে প্রপোজ করছো।
লোকে জানলে কী বলবে।
: পুর্বের ব্যাবহারের জন্য আমি সরি।
এখন আমার কথার উত্তর দাও তো
: আমিও সরি। আমার জীবনে অন্য কেউ আছে
: কে সে?
: এই যে মোহনা। ( মোহনাকে কাছে টেনে বললাম)
: এই মোহনা । আমি তো জানতাম তোমরা শুধু বন্ধু
: ছিলাম কিন্তু এখন আমরা দুজন দুজনার।
: আরে ওর মধ্যে কী আছে
যেটা আমার ভিতরে নেই।
: ও যেটা আমি সেটাই নিয়ে খুশি।
: প্লিজ, আমাকে ফিরিয়ে দিও না।
: তুমি বুঝসো না কেন, মোহনা আমার জীবন। আর ওকেই আমি ভালবেসে যাবো।
: তুমি কিন্তু আমাকে চেন না। আমি যেটা চাই সেটা পেয়েই ছাড়ি। না পেলে কাউকে সেটা পেতে দিই না।
: সেটা তোমার ইচ্ছা।
: আচ্ছা দাড়াও।
এই বলে তাসনীম যেন কাকে
ফোন করলো।
কিছুক্ষণ পরে ওর বাবা এলো যিনি কীনা
স্হানীয় থানার ওসি। উনি এসে তাসনীমকে বললেন -------
: কী হয়েছে মামুনী
: আব্বু, এই ছেলে আমাকে ডিস্টার্ব করে। অপমান করে।
( আমাকে দেখিয়ে। মেয়েটা বলে কী)
: এই ছোকড়া তোর সাহস হয়
কীভাবে আমার মেয়েকে
ডিস্টার্ব করিস, অপমান করিস ( চড় মেরে)
: দেখুন আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন, আমি আপনার মেয়েকে
ডিস্টার্ব করিনি এবং অপমানও করিনি।
বরং ও আমাকে অপমান করতো। ( আমি)
: আবার মুখে মুখে তর্ক করিস।
একেবারে লকাবে ভরে দিবো কিন্তু।
: আমাকে লকাবে ভরবেন। এত ক্ষমতা আপনার। কিছু সময় দাড়ান।
আমি সাধারণত রাগি না কিন্তু যখন রেগে যাই তখন নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না।
দিলাম আব্বুকে ফোন। আব্বু অফিসে।
বললো ৫ মিনিটের ভিতরে আসতেছি।
কয়েক মিনিটের ভিতরে আব্বু আসলো।
সাথে অবশ্য অনেক অফিসার ছিলো, সিপাহি ইত্যদি ইত্যদি । কারণ তিনি অফিস
থেকে আসছেন। মোহনার
বাবা আমার আব্বুকে দেখে স্যালুট করলো। মেজর বলে কথা। আব্বু বললো -----
: এখানে কী হয়েছে?
: স্যার, এই ছেলে আমার
মেয়েকে ডিস্টার্ব করে তাই
ওকে একটু বোঝাতে আসছিলাম।
: ওহ আচ্ছা, আপনি কী ওর গায়ে হাত তুলেছেন?
: জ্বী স্যার, একটা চড় দিয়েছে। তাহলে আর আমার মেয়েকে ডিস্টার্ব করবে না।
: আপনার সাহস হয় কী করে ওর গায়ে হাত তোলার ( ক্রুদ্ধভাবে)
: কেন স্যার ( মনে হয় ভয় পেয়েছে)
: আপনি যানেন ও কে?
: না স্যার
: ও আমার ছেলে।
আব্বুর এই কথা শুনে সকলে
আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে
তাকালো যেন আমি একটা এলিয়েন ।
আসলে আমি যে একজন
মেজরের ছেলে সেটা কেউ জানে না।
: আপপনারর ছেললে ( তোতলাচ্ছে)
: হ্যা,আমার ছেলে ।
আপনার সাহস হয় কী
করে আমার ছেলের গায়ে হাত তোলার।
যাকে কোনোদিন আমি
উচ্চস্বরে কথা পর্যন্ত বলি নাই
তাকে আপনি চড় মেরেছেন।
আপনার স্পর্ধা দেখে আমি অবাক হচ্ছি
: আমি বুঝতে পারি নাই। সরি স্যার।
: কিসের সরি।
: আব্বু থাক না। ওনাকে যেতে দাও। ( আমি)
: আমার বাবু বললো বলে
আপনাকে ছেড়ে দিলাম
( আব্বু আমাকে আদর করে বাবু বলে)
: আচ্ছা বাবু, আমি এখন যায়।( আব্বু)
: আচ্ছা আব্বু।
: কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলিস
: আচ্ছা।
তারপর আব্বু চলে গেলো। তাসনীমও চলে গেলো তবে যাওয়ার আগে........
চলবে........

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.