লিখেছেনঃ Md Asif
কিছু সময় পর কে
যেন আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।
আমি তাকিয়ে যেন
আকাশ থেকে পড়লাম।
তাকিয়ে দেখি আমার
সামনে নিশাত দাড়িয়ে।
ও আমার সামনে কেন।
আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
অবাক করার
বিষয় হলো নিশাত কাঁদছে।
মোহনা আমাকে বললো -----
: মেয়েটা কে? তুমি চিনো নাকি?
: নাহ, আমি কাউকে চিনি না।
: তাহলে ও তোমার দিকে
তাকিয়ে কাঁদছে কেন?
: আমি কেমনে জানবো। চলো তো এখান থেকে।
: কেন।?
: আরে, চলো না।
আমি মোহনাকে টেনে
নিয়ে চলে আসতে লাগলাম।
হঠাৎ আমি আমার হাতে
কারো স্পর্শ পেলাম।
এ স্পর্শ আমার বহু পরিচিত।
আমি বুঝতে পারছি নিশাত
আমার হাত ধরেছে। আমি বললাম---------
: আমার হাত ছাড়ুন?( আমি)
: নাহ, আমি ছাড়বো না। (নিশাত)
: আমার হাত ছাড়ুন।( আমি)
: ছাড়লে তুমি চলে যাবে।( নিশাত)
: ঠাসস্স। °°° সাহস কী করে
হয় আমার হাত ধরার।
: প্লিজ, আমার কথা শোনো।( নিশাত)
: আমি কারো কথা
শোনোর জন্য প্রস্তুত না।( আমি)
: এখানে হা করে কী শুনছো।
চলো এখান থেকে ( মোহনাকে বললাম)
আমি আর কিছু না বলে
মোহনাকে নিয়ে চলে আসলাম।
আমি ওকে আর চাইনা।
ওকে মারতে আমার কম কষ্ট হয়নি।
কিন্তু আমি কী করতাম।
আসার সময় মোহনা
অনেকবার আমার
কাছে জানতে চেয়েছিলো
মেয়েটি (নিশাতের) ব্যাপারে
কিন্তু আমি কিছুই বলিনি।
মোহনা হয়তো আমার
মনের অবস্হা বুঝতে পেরেছিলো
তাই আর কিছু জিজ্ঞাসা করেনি।
আমি আর কলেজে থাকলাম না।
মোহনাকে বাড়ি নামিয়ে
দিয়ে আমি বাড়ি চলে আসলাম।
আজকে প্রচুর ডিপ্রেশনে
ভুগছি আমি।
কী করবো, কেন এলো আবার জীবনে?
কীইবা চাই। ভাবি আর
এই অবস্হা দেখে বললো ------
: কী হয়েছে তোমার?
: কিছু না।
: তাহলে এইরকম লাগছে কেন?
: নাহ, কিছু হয়নি।
: আচ্ছা, নিজের খেয়াল রেখো।
: হুম।
ভাবির সাথে আর
কিছু বললাম না।
কিছু বলার মানসিকতাও আমার নেই।
নিজের রুমে চলে আসলাম।
এখন আমার দরকার একটা ঘুম।
ঘুম হলে আমার চিন্তা
কিছুটা কমলেও কমবে।
তাই ঘুম পড়ার চেষ্টা করলাম।
কিন্তু ঘুম তো
কিছুতেই আসে না।
শুধুই নিশাতের কথা
আমার মস্তিষ্কে বিচরণ করছে।
আমি কীভাবে আমার
মন থেকে নিশাতকে সরাবো।
আমি যতই ওকে মন
থেকে সরাতে চাচ্ছি ততই
নিশাত আমার ভিতরে চেপে বসছে।
কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম
আমি নিজেই জানি না।
অবশ্য জানার কথাও না
কারণ সেই সময় মস্তিষ্ক বিশ্রামে থাকে।
ঘুম ভেঙ্গে গেল।
ভূমিকম্প হচ্ছে নাকি।
বেড এমন কাপছে কেন।
আরেহ, এটা ভুমিকম্প না।
আমার মোবাইল বাজছে।
ভাইব্রেট করা ছিলো।
মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে
দেখি মোহনা কল করেছে।
: আস্সালামুআলাইকুম।( আমি)
: ওয়ালাইকুমআস্সালাম।
তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো?
: হুম বলো।
: মোবাইলে সব কথা বলা যাবে না।
: তাহলে?
: তুমি ৫টার সময় পার্কে চলে এসো।
: আচ্ছা, আসবো।
: আচ্ছা,বাই।
: বাই।
মোবাইলে দেখলাম ৪ টা বাজে।
বেশি সময় নাই।
মোবাইল রেখে ফ্রেশ হতে গেলাম।
ফ্রেশ হয়ে কিছুটা
খেয়ে নিলাম কারণ
দুপুরে কিছু খাইনি।
ক্ষুদাও লেগেছিলো।
এই করতে করতে ৪:৩০ বেজে গেলো।
আমি তাড়াতাড়ি
রেডি হয়ে পার্কের উদ্দেশ্য বের হলাম।
পৌছাতে সময় লাগলো ২০ মিনিট।
কিন্তু সমস্যা হলো এতবড়
পার্কের কোথায় পাবো ওকে।
মোহনাতো কোথায় থাকবে
এটা বলেনি। খুজে দেখি।
পাক্কা ১৫ মিনিট লাগলো
মোহনাকে খুজতে।
পার্কের শেষ মাথায় বসে আছে সে।
এদিকে কেউ নেই বললেই চলে।
কালো রং এর একটা
শাড়ি পরেছে। বাহ, অনেক সুন্দর লাগছেতো ওকে।
সব সুন্দরের প্রশংসা
করতে নেই। সুন্দরের
অমর্যাদা করা হয়।
তাই আর নাইবা কিছু বললাম।
আমি যেয়ে ওর পাশে বসলাম।
আমি যে বসেছি সেটা
একদমই খেয়াল করেনি মোহনা।
কিছুক্ষণ বসার পর -------
: এহেম এহেম ( আমি)
মোহনা কিছুটা চমকে উঠল
যেমন মানুষ চমকে উঠে
হঠাৎ কিছু হয়ে গেলে।
: কখন এলে? ( মোহনা)
: এইতো অনেকক্ষণ।
: আমাকে ডাকােনি কেন?
: দেখলাম তুমি কী ভাবছো
তাই আর ডাকেনি।
: ও।
: আমাকে কী জন্য ডেকেছো?
: তোমাকে যেটার বলার
জন্য ডেকেছিলাম সেটা বলার
আগে একটা কথা বলি?
: হুম, বলো।
: আমাকে কথা দাও যে, তুমি
কোথাও চলে যাবে না।
: আচ্ছা, কথা দিলাম।
কিন্তু কী এমন বিষয় যে
আমার কাছ থেকে অগ্রিম
ওয়াদা করে নিচ্ছো।
: সেটা পরে বুঝতে পারবে
তবে এটা আমাদের
জীবনের সাথে জড়িত।
আবারও বলছি তুমি কিন্তু চলে যাবে না।
: আচ্ছা, আমি যাবো না,
যাবো না, যাবো না।
এই তিনবার বললাম।
এইবার বিশ্বাস হলো?
: বিশ্বাস করলাম।
এই তুমি এইবার আসো।
মোহনা কাকে যেন
আসতে বললো। কিন্তু আসলো
আমি তাকে এখানে
কখনোই আশা করিনি।
ভিতর থেকে কে বেড়িয়ে
আসলো জানেন?
ভিতর থেকে নিশাত
বেড়িয়ে আসলো।
কিন্তু নিশাত এখানে কেন?।
আর মোহনার সাথেইবা
কীভাবে পরিচয় হলো?।
অনেকগুলো প্রশ্ন আমার
মাথার ভিতরে জটলা পাকাচ্ছে।
আমি এখানে থাকতে পারবো না।
ওকে সহ্য করতে পারবো না।
আমি উঠে যাওয়ার
জন্য দাড়ালাম।
মোহনা আমাকে হাচকা
টান দিয়ে বেন্চে বসালো
এবং আমাকে বললো ------
: তুমি কিন্তু আমাকে
ওয়াদা করেছিলে এখান থেকে যাবে না।
: এইসব কী মোহনা আর তুমিই বা কী চাচ্ছো?
: সেটা একটু পরেই জানতে পারবে।
অগত্যা বাধ্য হয়ে আমাকে
ওখানে থাকতে হলো।
আমি এখানে একটুও
কমফোর্টেবল ফিল করছি না।
তার ওপর আবার মোহনা
নিশাতকে আমার পাশে বসালো।
জ্বালার ওপর জ্বালা।
: তোমাকে অনেক কিছু
বলার ছিলো, শুনবে কী? ( মোহনা)
: না শুনলে কী তুমি ছাড়বে?
: সেটাও অবশ্য ঠিক।
এইবলে মোহনা একটু হাসলো।
অন্যসময় এই হাসিটা
আমার কাছে অমূল্য কিন্তু
এখন আমার কেমন
জানি একটুও ভালো লাগছে না।
তারপর মোহনা বলা শুরু করলো।
।
।
চলবে..........