আম্মুঃ এইইই,,, তোর কি কোনো বুদ্ধি সুদ্ধি নাই,,, নতুন বউয়ের হাতে পা টিপাচ্ছিস।
আমিঃ আরে আম্মু তুমি! আআর বইলো না,, তোমার বউমাকে এত করে বললাম যে,, তুমি নতুন বউ,, আমার পা টিপলে কেমন দেখায়
,,,বেচারির একটাই কথা,,(আপনি আমার বর,, আপনার খেদমত করা আমার দায়িত্ব) ,, তাই জুর করেই এখন আমার পা টিপে দিচ্ছে,, ( একটু লজ্জা লজ্জা ভাব লইয়া) আসলে আম্মু, তোমার বৌমা আমাকে বড্ড বেশি ভালোবাসে,,, খুব ভাগ্য করে ওকে পেয়েছি
( কথাগুলো বলার সময় লক্ষ্য করালাম রিয়া রাগের ঠেলায় দাতে দাত কামরাচ্ছে)


আম্মুঃ ( রিয়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে,,আর মুখে এক গাট্টি ভেটকি বজায় রাইক্ষা ) দেখতে হবেনা মেয়েটা কার
আচ্ছা তাহলে এখন খেতে আসো,,,

আমিঃ আচ্ছা আম্মু,, তুমি যাও আমরা আসতেছি।
আম্মু রুম থেকে যাতেই...
রিয়াঃ ওওওওওয়া,, অওঅঅওওঅঅয়া 
তুই আমারে দিয়া তোর পা টিপাইলি,, তুই একদমই ভালো না,, খুব পচা ,,, আমার মান সম্মান কিছুই রইলো না।


আমিঃ লে খোকা
,, তুই আমার পা টিইপ্পা দিছিস,,, এতে আবার মান সম্মান যাবে কেন!,, বিয়ার পর প্রত্যেকটা মেয়ের দায়িত্ব তার স্বামীর পা টিপে দেওয়া ( ভায়েরা আমার,, চিল্লায়া কন ঠিক কিনা?)

রিয়াঃ তুই সারাজীবন এমন হিংসুইট্টাই থাকবি,,( কথাডা কইয়াই রিয়া খাওয়ার জন্য, খাবার টেবিলের উদ্দেশ্যে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে লাগলো)
আমিঃ চেতিস না বইন,, আমি হাছা কথাই কইছি
,,,( এই যে পাঠকগণ আপনারা একটু বইয়া জিরায়া লন,, আমি খাইয়া আইতাছি,, আর হে,, আজকে খাওয়ার জন্য আপনাদের সাধমু না,,, অন্য একদিন খাওয়ামুনে { এই কথাডা আমি মনে মনে কইতাছি,, আপনারা শুইনেন না কেমন,,, বাল খাওমু আপনাগরে,, এত পাবলিক খাওয়াইলে আমার আব্বাজানের পকেট ফাকা হইয়া যাইবো })

তারপর খাওয়াদাওয়া শেষ কইরা,,, রুমে আসতেই রিয়ারে কইলামঃ বাবুউউউ,, আমার বিছানাটা করে দাও তো। ( রিয়া এক গাট্টি রাগ লইয়া যেই আমার দিকে তাকাইলো,, তখন আমিও মোবাইলটা নাড়াচাড়া কইরা তাহাকে দেখানো মাত্রই,,, এক বদনা সমবেদনা আর এক বালতী রাগ মাথায় লইয়া,, বিছানাডা কোনো ভাবে করেই,, সে নিচে বিছানা করে শুয়ে পড়লো)
তারপর আমিও খুশিতে গদ গদ করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম, নিজেও জানি না।
রাত প্রায় ২ টা......
অকারণেই ঘুমটা ভেঙে গেলো,,, হঠাত করেই কেনো যেনো রিয়ার দিকে আমার চোখ টা আটকে গেলো,,, মনের মধ্যে অজানা এক শিহরণে ভেতর টা কেমন যেনো কেপে উঠলো,,, চারিদিকে শুনশান নীরবতা,,, সত্যি কথা বলতে এই রাতটা আমাদের ব্রহ্মাণ্ড কে এক অন্য রকম রুপ ধারণ করে দেয়। এতদিন বিখ্যাত কবিদের মুখে শুনেছি ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েদের নাকি অনেকটা অস্পর্শীর মত লাগে,,,কিন্তু ঘুমন্ত অবস্থায় একটা মেয়ের চেহেরায় যে এতটা মায়া যুক্ত হয়,, সেটা হয়তো আমরা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস ই করতে পারবো না। ব্রহ্মান্ডের সকল মায়া যেনো তার চেহারায় বিধাতা ঢেলে দিয়েছেন। হুট করেই লক্ষ্য করালাম, রিয়া একটু অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে গুটি-শুটি মেরে শুয়ে আছে,, তারপর বিছানা থেকে চাদর টা নিয়ে ওর গায়ের উপর দিয়ে,,, ওর কপাল টায় একটা চুমু একে দিলাম।
সকালে নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা করছি,, এমন সময় আম্মু বলে উঠলোঃ সাদ,, আজকে তো ৩ দিন পূরণ হলো,, তাই আজকে তোকে রিয়াকে নিয়ে রিয়াদের বাসায় যেতে হবে।
আমিঃ
আমাকে যেতে হবে কেন। তুমি গেলে সমস্যা টা কি? ( আমার এমন বোকাসোকা উত্তর শোনে রিয়া হুট করেই হু হু করে হেসে উঠলো,,, আহা কি হাসি
,, এই হাসির প্রেমে পড়েই আমি নির্দ্বিধায় পরলোক গমন করতে পারব)


আম্মুঃ ( আমার এমন উত্তর শোনে আম্মু হাসবে না কাদবে বুঝে উঠতে পারছে না) তুই কি আমার সাথে মজা করতেছিস!
আব্বুঃ আরে গাধা,,, বিয়ের ৩ দিনের মাথায় স্বামী স্ত্রী দুজনকেই স্ত্রীর বাসায় যেতে হয়। আমিও তো তোর আম্মুকে নিয়ে গিয়েছিলাম
। আহা তোর নানা নানী কি যতনটাইনা করে ছিলো 


আমিঃ
আম্মু আমি একা যাইতে পারমু না,,, আমার ডর করে।

আম্মুঃ ( বস্তার বস্তা রাগ মাথায় লইয়া) তাহলে আমার লক্ষী, বিয়ে করার আগে তো ভয় লাগে নাই,,, রেডি হয়ে নে,, কিচ্ছুক্ষণ পরেই রওনা হবি।
ভাইরে আমার আম্মুরে ক্যাডায় বুঝাইবো,, আমি এখনো অনেক চুডু
একলা একলা ক্যামনে যামু,, দুঃখের ঠেলায় অক্করে রানু মন্ডলের সেই কুখ্যাত গানটা,, আআআআআয়া কইরা মনের মধ্যে বাইজ্জা উঠতাছে।

বহু নেকামি, কাহিনী এবং ঠেলাঠেলির পরও কোনো উপায় না দেইখা,, বাদ্য হয়েই শশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রিয়াকে নিয়ে রওনা হলাম।
রাস্তায় গাড়ির মধ্যে রিয়ার দিকে তাকাইতেই মনে মধ্যে কাউয়ার মতো কা কা কইরা উঠলো,, আহারে আমারনা জানি কি হাল করে ওর বাসায় নিয়া
,,,এই যে পাঠাক ভায়েরা আমার জন্য একটু দোওয়া কইরেন,,, বুঝতেই পারছেন
প্রথম শশুর বাড়িতে যাইতেছি,,,,


প্রায় ৩৫ মিনিট পর জার্নি করার পর আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে পৌছাইলাম,,,আহা শশুর বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্রই মনডা এক্কেবারে ফুরফুরা হইয়া গেলো,,,
আহারে ভাউ কতযে আটাবতী, ময়দাবতী,, আর রূপবতী তরুণীর ঝাক এইখানে বিরাজ করিতেছে,,, উউউউহ আমি নাকি আমার শশুর বাড়িতে আসতে গিয়ে এত ভয় পাচ্ছিলাম,, কত্তবড় হাদারাম আমি,, মনডাই কইতাছে মাহফুজুর রহমানের গান ফুল বলিউম দিয়া শুইন্না তার প্রতিশোধ নেই,, কিন্তু ভাই নিজের উপর প্রতিশোধ নিতেও কেমন যেনো মায়া হচ্ছে,, তাই আর কিছু না কইরাই, আমাদের জন্য পরিপাটি করে রাখা রুমটাতে প্রবেশ করলাম,,,
কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর পরই এক গাট্টি মহিলা থুক্কু যুবতী মাইয়া আইসা আমার চারিপাশে ঘ্যানঘ্যান করিতে লাগিলো,,, আহহহ মাইগুলা একেকটা কিউরেটর বদনা ধুরু খুশির ঠেলায় আবল তাবল কয়ালতাছি,,, মাইয়া গুলা একেকটা কিউরেটর ডিব্বা
আহহহ দেখলেই পড়ানডা জুরায়া যায়। এই ঝাক থেইক্কা অনায়াসে দুই চারটা গফ বাইচ্ছা লওন যাইবো
কিন্তু আমিতো বিয়া কইরালছি,, তাই গফ লওয়া হইলো না 



তারপর সালিকাগুলার সাথে কিচ্ছুক্ষণ আড্ডা দিয়া,,, দুপুরে খাবারা খাইয়া,,, সেইইই আমার বিখ্যাত কাপড় লুঙ্গি পইরা একটু এক্সট্রা কইরা জামাই জামাই ভাব লইয়া সালিকাদের সাথে ঘুরতে বের হইলাম,,,
তারপর বেশ কিছুক্ষণ ঘুইরা টুইরা,, আবারও রিয়ানির কাছে ফিরা আসলাম,,, দেখি মহারানী আমার মনে শখে ঘুমাইতেছে,,, আমি আস্তে আস্তে রিয়ার কাছে গিয়ে ওর গালে হাত দিয়ে স্পর্শ করতেই ফট কইরা রিয়া উঠে বসেই,,,
রিয়াঃ এএএইইই তুই আমাকে টাচ করলি কেন! তোর মতলব টা কি হু

আমিঃ লে খুকা,, তুমিনা ঘুমিয়ে ছিলা!
রিয়াঃ কিহ,,, তারমানে তুই আমার ঘুমের সময় আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নেছ। উউউহু হু হু
তুই আমার এত্তো বড় সর্বনাশ কেমনে করলি।

আমিঃ বিশ্বাস কর বইন,, আমি তোরে কিচ্ছু করি নাই,,, তোর বিশ্বাস না হইলে পাঠকগনকে জিজ্ঞেস কর 

Waiting for next part...