লিখেছেনঃ Writer Srabon Ahamed Sayed
আমিঃ বিশ্বাস কর বইন,, আমি তোরে কিচ্ছু করি নাই,,, তোর বিশ্বাস না হইলে পাঠকগনকে জিজ্ঞেস কর 

রিয়াঃ তোরে আমি বিশ্বাস করি না
তুই আমার থেকে ৪ ফুট দুরে থাকবি।

আমিঃ যা সালা
,,, করুনা ভাইরাসের কারণে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার কথা শুনেছি,, কিন্তু ৪ ফুট দূরত্ব কেন


রিয়াঃ ( ঠাস কইরা বালিশ দিয়া আমার মাথায় মাইরা) তোর গবেষণা নিয়ে তুই থাক,,আমি গেলাম
( কথাডা কইয়াই রিয়া রুম থেকে ভাগা দিলো,, আর আমিও দুঃখের ঠেলায় চুপচাপ বিছানায় শুইয়া রানু মন্ডলের গানডা শুনতে শুনতে ঘুমায়া গেলাম )

সন্ধ্যার দিকে রিয়ার ডাকে ঘুম ভাঙলো,,,
রিয়াঃ এই শোনছো।
আমিঃ হুম বলো।
রিয়াঃ ( আমার পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে) লক্ষী আমার উঠো।
আমিঃ ( কি বেপার! মাইয়ার মতলবটা কি,, হুট কইরা এতো চেঞ্জ) তুমি ঠিক আছো তো
।

রিয়াঃ হুম সোনা,, আমি ঠিক আছি,, তুমি ফ্রেশ হয়ে একটু বাইরে আসো। আমার নানু আর মামা মামি আসছে,, তোমাকে দেখার জন্য।
আমিঃ ( দেখছ নি কারবারটা) আচ্ছা,, তুমি যাও আমি আসতেছি।
রিয়াঃ আরে তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো তো,, আমি তোমাকে নিয়েই যাবো।
( তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেই ও আমার হাতে ধরে এমন ভাবে আমাকে ওর নানু,, আর মামা মামির সামনে নিয়ে গেলো,, যেনো এই দুনিয়াতে আমাদের মতো এত সুখী দম্পতি আর একটাও নাই,,আমি উনাদের সামনে গিয়ে সালাম দিলাম,, সবাই আমার সালামের উত্তর দিয়ে আমাকে নানান প্রশ্ন করতে শুরু করলো,, আর আমিও হাদারামের মতো উনাদের বিরক্তিকর প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছি,, তারপর উনাদের সাথে কথা শেষ করে রুমে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম,, এমন সময় রিয়া এসে বললো,, বাবুইই চল,, খাবার টেবিলে তোমার জন্য সবাই অপেক্ষা করছে,, তারপর সোজা খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম )
রিয়ার আব্বুঃ তা বাবা তোমার এখানে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো।
আমিঃ না না আব্বা,, কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
রিয়ার মামীঃ দেখো বাবা রিয়া হয়তো একটু রাগী,,, কিন্তু ওর মনটা অনেক ভালো,,আমিতো ওর মামী হই,, তারপরও আমাকে ওর মায়ের মত মানে।
আমিঃ ( বেক্কেলের মত মুখে হাসি বজাই রাইক্ষা) জী মামী,, ও খুব লক্ষী মেয়ে
( কথাটা বলার পর পরই লক্ষ্য করালাম আমার শশুর মশায় এক বালতী রহস্য লইয়া কেমন ভাবে যেন আমার দিকে তাকাচ্ছে)

রিয়ার নানুঃ আমার নাতনী টা একদম আমার মতো সরল সোজা
কোনো ঘোরপ্যাঁচ বোঝেই না।

আমিঃ ( আবারও মদনের মতো মুখে এক বালতী হাসি বজায় রাইক্ষা) হুম নানু,, ওর ব্যাবহার তো এখনো সেই বিছানায় হিসু করা পিচ্চি বাচ্চাদের মতো,,, একদমি ঘোরপ্যাঁচ বোঝেনা। ( মনে মনে,,, হ বইন একদমই ঘোরপ্যাঁচ বোঝেনা,, শুধু ভেতর একটু জিলাপির প্যাচ আর কি,,, আমার শশুর মশায় এই আইটেম টাকে কোথা থেকে কুড়ায়া আনছে কে জানে)
তারপর খাওয়াদাওয়া শেষ করে,,, একটু বিশ্রাম নিয়ে,,, তারপর একা একা একটু ছাদে গেলাম। ওমা ছাদে হিন্দি গান কে শুনে
,, চাঁদের আবছা আলোয় চোখে পড়ল ছাদের এক কোনায় কেউ একজন উল্টো দিকে বসে এই এত রাতে হিন্দি গান শুনতেছে,,, আমি উনার কাছে গিয়ে উনার চেহারাটা দেখা মাত্রই আমার চোখ খুইল্লা মাটিতে পইরা যাওয়ার অবস্থা,,তারপর নিজেকে একটু সামলে নিয়ে আমতা আমতা করে বললামঃ আ আব্বা আপ আপনি! ( আমার মহামান্য শশুর মশাই)

রিয়ার আব্বুঃ ( মোবাইলের গান টা অফ করে) আরে বাবা তুমি,, বসো।
আমিঃ না মানে আব্বা,,,রুমে বসে বোরিং লাগছিল,, তাই একটু ছাদে আসছিলাম আরকি। আচ্ছা আব্বা আমি তাহলে যাচ্ছি। ( কথাটা বলেই আমি হুসাইন বোল্টের গতিতে হাইট্টা হাইট্টা ভাগা দিতে লাগলাম)
রিয়ার আব্বাঃ এইই জামাই শোন,,আরে এইদিকে আসো।
আমিঃ (আবারও উনার কাছে গিয়ে) জি আব্বা।
রিয়ার আব্বুঃ আরে বসোওও,, রুমে গিয়ে কি করবা (কথাটা বলেই আমার হাতে টান দিয়ে আমাকে উনার কাছে বসিয়ে দিলো)
রিয়ার আব্বুঃ (আমার কানের কাছে এসে ফিস ফিস করে বললো) আচ্ছা বাবা একটা সত্যি কথা বলতো,, খাবার টেবিলে বসে তুমি রিয়ার নামে যে প্রশংসা করলে তা সত্যি! 

আমিঃ ( একটু ইতস্ততা বোধ করে) কি বলেন আব্বা
আপনার মেয়েতো ভালোই।

রিয়ার আব্বুঃ ( ফিস ফিস করে) ডাল মে কুচ কালা হে

আমিঃ জী আব্বা কিছু বললেন?
রিয়ার আব্বুঃ আর এ নাহ,,, ( আমার পীঠে হাত দিয়ে,,) বাবারে কেউ না বুঝলেও আমি তোমার দুঃখ টা বুঝতেছি
। কারণ ওর আম্মুর সাথে জীবন টা পার করতেছি তো
মেয়েটা একদমি তার মার মত হয়েছে।


আমিঃ ( লজ্জা শরম পকেট রাইক্ষা) আআআআহহহ আব্বাজান আপনি আমার মনের কথাগুলা বুঝতে পারছেন
আচ্ছা আব্বাজান এই মাইয়াডা কি সত্যিই আপনার।

রিয়ার আব্বুঃ মানে!
আমিঃ না মানে আব্বা,,, একটুও আপনার সাথে মিলে না
,,, আপনার মতো এত ভালো একটা মানুষের ঘরে কেমনে এই মাইয়া হইব


রিয়ার আব্বুঃ বাবারে সবই আমার কপালের দুষ। জানো বাবা,, কথাবার্তা পাকা হওয়ার পর তোমাকে অনেক খুজেছি,, কিন্তু কোথাও পাইনি।
আমিঃ সেকি! আমাকে খুজেছিলেন কেন!
রিয়ার আব্বুঃ দেখ আমি একটা পুরুষ মানুষ হয়ে,, আরেকটা পুরুষের জীবন কেমনে জাইনা শুইনা ধ্বংস হতে দেই,,, তাই তোমাকে খুজেছিলাম আগাম সতর্কসংকেত জানানোর জন্য,, ( এক গাট্টি দীর্ঘশ্বাস ছাইরা) কিন্তু বাপরে তোমার কপালটাই খারাপ
।

আমিঃ আচ্ছা আব্বা বাদ দেন। যা হবার তাতো হয়েই গেছে। আপনি যখন আমার শাশুড়ী আম্মার সাথে জীবন টা পার করতে পেরেছেন,, তাহলে আমাকেও পারতেই হবে,,,
রিয়ার আব্বুঃ ( সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে) এই নাও বাবা বিড়ি খাও ( আচমকা শশুর আব্বার মুখে বিড়ি খাওয়ার কথা শুইনা আমি কয়েক সেকেন্ডের জন্য হার্ট অ্যাটাক কইরা মরতে মরতে গিয়েও বেচে গেলাম)
আমিঃ না না আব্বা আমি এসব খাইনা।
রিয়ার আব্বুঃ আরে বাবা লজ্জা পেয়ো নাতো,, আমি জানি এই বয়সে বিড়ি খাওয়ার একটা প্যারা থাকে,,, আমিও তোমার মত প্রথম দিন শশুর বাড়িতে গিয়ে বিড়ি খাইতে পারি নাই,,, নাও বিড়িটা মুখে নাও,,
( বাপরে এমন শশুর মশাই থাকলে বাল আর বউয়ের আদর লাগত না,,,, কথা কন, ঠিক না বেঠিক?) আমি মুখে বিড়ি নিতেই শশুর মশায় লাইটার নিয়ে আমার বিড়িতে আগুল জালিয়ে দিলো,,, তারপর আমার পরানের শশুর মশাই নিজেও একটা বিড়ি ধরাইয়া ধুম টানতে লাগলো,,, আহা শশুর আর জামাই বইসা এক লগে বিড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা,,,
দুই ভাই থুক্কু দুই জামাই শশুর মিইল্লা বিড়ি টানতাছি,, এমন সময় হঠাৎ করেই দেখি আমার শাশুড়ী আম্মা, রিয়ার নানু, রিয়ার মামী আর রিয়া আমাদের সামনে আইসা হাজির

রিয়ার আম্মুঃ এসব কি!( উরিমারে বেশি বাল পাকনামি করতে গিয়া ধরা খাইয়া গেলাম,, এখন কি করমু
)

*পরবর্তী পর্ব আগামীকাল দুপুর ২ টায় প্রকাশ করা হবে। by the grace of Allah 
